ওয়েব ডেস্ক:- সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ জুম্মা নামাজ স্থগিত করার পাশাপাশি মক্কা ও মদিনার দুটি পবিত্র মসজিদের চত্বরে প্রবেশ বা অন্যান্য নামাজ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববীর জেনারেল প্রেসিডেন্সির এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) এখবর জানিয়েছে।
করোনা ভাইরাস রোধ করতে পবিত্র দুই মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সি ঘোষণা করেছেন এই স্থগিতাদেশ অস্থায়ী।
জেনারেল প্রেসিডেন্সির মুখপাত্র টুইটারে লিখেছেন- স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ এই অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা কোভিড -১৯ প্রতিরোধ করতে মক্কার মসজিদ আল-হারাম এবং মসজিদে মসজিদে নববীর বাইরের চত্বরে শুক্রবার (২০ শে মার্চ) নামাজ পড়া স্থগিত করা হয়েছে।
পবিত্র মসজিদের তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য জনগণকে এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য মসজিদে নববী ও গ্র্যান্ড মসজিদের জেনারেল প্রেসিডেন্সি জনসাধারণকে আহ্বান জানিয়েছেন।
ওলামা কাউন্সিল ঘোষণা করেছে যে করোনা ভাইরাস সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য না হওয়া পর্যন্ত লোকেরা তাদের বাড়িতে জুম্মা বা অন্যান্য নামাজ পড়তে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে সৌদি আরবের সুরক্ষা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা যে সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে তাতে অবশ্যই সাফল্য আসবে।
কুয়েত- আমিরাতের পর এবার মক্কাতেও আজানে শব্দ পরিবর্তন
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মরণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে পাকিস্তান, কুয়েত ও আরব আমিরাত আজানের শব্দে পরিবর্তন এনেছিল। এবার সে তালিকায় নাম লেখালো সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কা।
হাদিসে এসেছে দুর্যোগের কারণে আজানে পরিবর্তন করা যেতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুয়াজ্জিনকে তা করতেও বলেছেন। হাদিসে দুটি শব্দ এসেছে। তার একটি হলো ‘সাল্লু ফি বুয়ুতিকুম। আর অন্যটি হলো ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’। পবিত্র মক্কা নগরীর আজানে সাল্লু ফি রিহালিকুম শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে কুয়েত এবং আরব আমিরাতে আজানের শব্দ ‘হাইয়্যা আলাস-সালাহ’ পরিবর্তন করে তদস্থলে ‘আস-সালাতু ফি বুয়ুতিকুম’ বলা হয়েছিল।
এবার পবিত্র নগরী মক্কায়ও আজানের শব্দ ‘হাইয়্যা আলাস-সালাহ’ পরিবর্তন করে তদস্থলে ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ অর্থাৎ ‘তোমরা আবাসস্থলেই নামাজ আদায় করে নাও’ বলে আহ্বান করা হয়। আজানের পরিবর্তিত শব্দ ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ শব্দটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ভাইরাল হয়।
হাদিসে আজানের শব্দ পরিবর্তন করে নামাজের জন্য আহ্বান করার কথাও রয়েছে। যদি কোনো অঞ্চলে আবহাওয়াজনিত প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, ঝড়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কুয়াশায় অথবা মহামারী দেখা দেয়, তবে সেসব অঞ্চলের আজানের শব্দে পরিবর্তন করা যেতে পারে মর্মে অনেক হাদিসে বর্ণনা রয়েছে।
হাদিসে এসেছে-হযরত নাফি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, প্রচ- এক শীতের রাতে হযরত ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু যাজনান নামক স্থানে আজান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেন- ‘সাল্লু ফি রিহালিকুম’ অর্থাৎ তোমরা আবাস স্থলেই নামাজ আদায় করে নাও।’
পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘লাইহি ওয়া সাল্লাম সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আজান দিতে বললেন এবং সঙ্গে সঙ্গে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
সুতরাং মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে কুয়েত, আরব আমিরাত, পাকিস্তানের পর পবিত্র নগরী মক্কায় আজানের শব্দ পরিবর্তনে কোনো অসুবিধা নেই। হাদিসের আলোকে দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় আজানের শব্দ পরিবর্তন করা যায়। মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে কুয়েত, আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও সৌদি আরবের আজানের শব্দ পরিবর্তন হাদিসেরই আমল। (সৌজন্য-দৈনিক সংগ্রাম)