সেরা বাংলা শারদ সম্মানে সম্মানিত বড়িশা সবুজ সাথী ক্লাব
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : এবার বাংলা রিপোটার্স গিল্ড আয়োজিত ৫১টি “সেরা বাংলা শারদ সম্মান”এর মধ্যে ষষ্ঠীর দিন বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত হলো বড়িশা সবুজ সাথী ক্লাব। পূজার ৮২তম বর্ষে তাদের থিম ছিল “সুরগুজি” শিল্পের অনুকরণে মণ্ডপ সজ্জা।
ক্লাবের পক্ষ থেকে দেওয়া “সুরগুজি” শিল্পের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে — ১৯৪১ সালে ছত্রিশগড়ের সুরগুজা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন সোনাবাই। সোনাবাইয়ের যখন মাত্র ১৪ বছর বয়স, তখন হলিরাম রাজওয়ার নামের এক বয়স্ক ব্যাক্তির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও তাদের কোনো সন্তান না হওয়ায় স্বামীর পরিবার এবং গ্রামের মহিলাদের কাছে তাকে চরম অপমানিত হতে হয়।
তখন হলিরাম সোনাবাইকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে বহু দূরে এক নির্জন জায়গায় চলে যায়। বিয়ের দশ বছর পর তাদের এক পুত্র সন্তান হয়। তার নাম দেওয়া হয় “দারোগা রাম”। আস্তে আস্তে দারোগা রাম বড় হতে থাকলেও সেখানে কোনো সঙ্গী সাথী না থাকায় সে একাকীত্বের মধ্যে দিন কাটাতে থাকে। তখন সোনাবাই কাদা-মাটি ও খড়-কুটো দিয়ে নানারকম পাখী তৈরি করে তাতে রঙ করে সুন্দর মূর্তি বানাতো। সেগুলোই তখন তার ছেলের সঙ্গী হয়ে উঠতো। শুধু পাখী তৈরি করেই থেমে থাকেননি সোনাবাই, তিনি তৈরি করেছেন নানা রকমের জালি — যাকে পাখিদের বসতি বলা হয়। এছাড়াও নানা শৈল্পিক কাজের সৃষ্টি করেছেন তিনি। এই শিল্পটি সুরগুজা জেলা থেকে উদ্ভুদ হয়েছিল, তাই এই শিল্পর নাম দেওয়া হয়েছিল “সুরগুজি”। এমনটাই জানালেন ক্লাবের এক কর্মকর্তা।
ক্লাবের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, সুরগুজি শিল্পের ইতিহাস অনেকেই জানেন না। তাই এই শিল্পকে জনসমক্ষে তুলে ধরার একটা সুপ্ত বাসনা তাদের মধ্যে ছিল। তাই ‘সুরগুজি’র অনুকরণে এবার তাদের মণ্ডপ সজ্জায় উপস্থাপিত করা হয়েছে তারই কিছু চিত্রপট ও মণ্ডপসজ্জা।