অয়ন বাংলা,ওয়েব ডেস্ক:- উপকারীর উপকার কোনওদিন ভুলতে নেই! সেকথাই ফের মনে করিয়ে দিলেন কেনিয়ার এক সাংসদ রিচার্ড টোংগি। ৩০ বছর আগে নেওয়া ২০০ টাকা শোধ করতে কয়েক হাজার কিলোমিটার পথে পেরিয়ে পৌঁছে গেলেন ভারতে। ১৯৮৫ সালে কেনিয়া থেকে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে পড়াশোনা করতে এসেছিলেন তিনি। ভরতি হয়েছিলেন স্থানীয় একটি ম্যানেজমেন্ট কলেজে। চারবছর ধরে পড়াশোনা করার পর ১৯৮৯ সালে ফের কেনিয়ায় নিজের বাড়িতে ফিরে যান তিনি।
কিন্তু, এই চার বছরে স্থানীয় মুদিখানা দোকানের মালিক কাশীনাথ গাউলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে রিচার্ডের। এর মাঝে একবার দরকার পড়ায় কাশীনাথের থেকে ২০০ টাকা ধার নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, কেনিয়া ফিরে যাওয়ার আগে তা শোধ করতে পারেননি। এরপর কেটে গিয়েছে ৩০ বছর। জীবনযুদ্ধে অনেক লড়াই করার পর কেনিয়ার সাংসদও নির্বাচিত হয়েছেন রিচার্ড। কিন্তু, শত ঝামেলা সত্ত্বেও ভুল যাননি সেই ২০০ টাকার কথা। ভুলে যাননি বিপদের সময়ে কাশীনাথের তাঁর পাশে দাঁড়ানোর কথা। তাই তিন দশক পর সময় বের করে চলে এসেছেন সোজা ভারতে। ঔরঙ্গাবাদ পৌঁছে বিপদের বন্ধু কাশীনাথের হাতে তুলে দিয়েছেন সেই টাকা।
যুবক বয়সের পুরনো বন্ধুকে প্রৌঢ় অবস্থায় দেখে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি কাশীনাথও। এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছি না আমি। এত বছর পরে ও যে আমাকে মনে রেখেছে এটা ভাবতেই পারছি না।”
উপকারী বন্ধুকে দেখে চোখের জল বেরিয়ে এসেছিল রিচার্ডেরও। পুরনো স্মৃতিমন্থন করে তিনি বলেন, “ঔরঙ্গাবাদে যখন পড়াশোনা করতাম তখন খুব গরিব ছিলাম। তখন গাউলির মতো মানুষরা আমায় খুব সাহায্য করেছিলেন। কেনিয়া ফিরে যাওয়ার পরেও সেই কথা ভুলতে পারিনি। কিছুদিন আগে আমার মনে হয়, ভারতে ফিরে গিয়ে পুরনো ধার শোধ করতে হবে। ওনাকে ধন্যবাদ জানাতে হবে। এই কথা মনে আসার পরেই ঔরঙ্গাবাদে আসার টিকিট কাটি। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন তিনি গাউলি ও তাঁর সন্তানদের মঙ্গল করুন। ওনারা আমার খুবই প্রিয়। এখানে আসার পর ওনারা আমাকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে খাওয়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আমি বলি যে ওনাদের বাড়িতেই খাব। গাউলি ও তাঁর পরিবারকে কেনিয়া যাওয়ার আমন্ত্রণও জানিয়েছি।”এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই প্রশংসার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়াতে। নেটিজেনরা প্রশ্ন করছেন, এখনও এমন মানুষ আছেন?
সৌজন্য :-সংবাদ প্রতিদিন