নিউজ ডেস্ক:-
Pranab Biswas,27 March: এক শিশু সহ একই পরিবারের ৫ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়াল নদিয়া জেলার তেহট্টর বার্ণিয়া এলাকায়।শুক্রবার রাতে নদিয়ার তেহট্টের এই পাঁচজন ব্যক্তির নমুনা নিয়ে Covid-19 পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাতে পজেটিভ ধরা পরে।এই নিয়ে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ১৫ ।
নয় মাসের শিশুকন্যাসহ একই পরিবারের ওই পাঁচ জন সদশ্য, সম্প্রতি এমন একজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন যিনি সম্প্রতি লন্ডন ভ্রমণ করে এসেছেন এবং মার্চ মাসের প্রথম দিকে নয়াদিল্লিতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।ওই পরিবারের আক্রান্তদের মধ্যে ৪৫ ও ২৭ বছর বয়সী দুই মহিলা এবং ১১ ও ৬ বছর বয়সী দুটি ছেলে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কলকাতা রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারেকের কথায়, আজ যাঁদের নমুনা পরীক্ষা করে মারাত্মক ভাইরাল সংক্রমণ ধরা পড়ল তাঁরা প্রত্যেকই সম্পর্কে ভাই-বোন ।শুক্রবার রাতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কলেরার অ্যান্ড এন্টারিক ডিজিজ (এনআইসিইডি) দ্বারা পরিচালিত মেডিক্যাল টেস্টের পরে তাদের সংক্রমণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরেই ওই পাঁচজনকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, অন্য ১৫ জনের মধ্যে 8 পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার জন্য রাজারহাটের কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র রাখা হয়েছে।তবে ওই ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টটি এখনও অপেক্ষায় রয়েছে।
সূত্রের খবর, ওই পরিবারের ২৭ বছরের মহিলা, যিনি নয়াদিল্লিতে কর্মরত ছিলেন,তিনি ১লা মার্চ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সন্দেহভাজন লক্ষণ নিয়ে ডাঃ আর.এম লোহিয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপর ওই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে ১৯ শে মার্চ শিয়ালদহগামী রাজধানী এক্সপ্রেসে চেপে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে তেহট্টর বারনিয়া গ্রামে ফিরে আসেন।
২০ শে মার্চ বাড়িতে পৌঁছানোর পরে, যুবতীর নয় মাস বয়সী শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। জেলা প্রশাসনের একটি মেডিকেল টিম বাইরে থেকে তাদের আসার কথা জানতে পেরে পরিবারের ১৩ জন সদস্যদের সবাইকে তেহট্ট শহরের কর্মতীর্থ ভবনে কোয়ারেন্টাইনের রাখা হয়।যেহেতু মারাত্মক সংক্রমণের লক্ষণগুলি তাদের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে তাই পরীক্ষা করার জন্য তাদের কোয়ারেন্টাইনের রাখা হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের অন্তত তিন সদস্য নয়াদিল্লি ও উত্তরাখণ্ডে কাজ করেন।
তেহট্টের এসডিও আনিশ দাশগুপ্ত বলেছেন, “আমরা জানতে পেরেছিলাম যে পরিবারের সদস্যরা এমন এক ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন যিনি সম্প্রতি লন্ডন ভ্রমণ করেছেন এবং নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।তাই আমাদের মনে হয়েছিল তেহট্টের ওই পরিবারের সদস্যরা তাঁর মাধ্যমে সংক্রামিত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে,২০ তারিখ সকালে শিয়ালদহ স্টেশনে নেমে সকালে ১০ টা ২০ মিনিটের শিয়ালদহ-লালগোলা প্যাসেঞ্জারে চেপে বেথুয়াডহরী স্টেশনে নামেন। ওখান থেকে অটোয় চেপে বার্ণিয়ার বাড়িতে পৌঁছায়।
এই গ্রামে যাওয়ার সময় ওই পাঁচ ব্যক্তি যাদের যাদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাদের সকলের চিকিত্সা এবং নমুনা পরীক্ষা করার জন্য তাঁদের খোঁজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
নদিয়া জেলা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “উদ্যোগের অংশ হিসাবে আমরা একটি অটোরিকশা চালককে আলাদা করে রেখেছিলাম যিনি ২০ মার্চ বেথুয়াডহরী রেল স্টেশন থেকে শিয়ালদা থেকে ট্রেন নামার পরে পাঁচজনকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন।” একজন কর্মকর্তা যোগ করেছেন, রেল কর্তৃপক্ষকে ১৯-২০ মার্চ শিয়ালদহ অবধি রাজধানী এক্সপ্রেসে ও ২০ শে মার্চ লালগোলার যাত্রীবাহী ট্রেনে এবং শিয়ালদহ থেকে যাত্রা করা সহযাত্রীদের শনাক্ত করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষের কাছে যোগাযোগ করা হয়েছে।