ওয়েব ডেস্ক:- উত্তেজনার পারদ দিন দিন পারদ বাড়ছে । হাথরসের তরুণীর প্রাথমিক ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ ছিল ধর্ষণের। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসা চূড়ান্ত রিপোর্টে ‘ধর্ষণে’র কথা বেমালুম উধাও হয়ে গিয়েছে! সেখানে শুধু লেখা রয়েছে, বারবার শ্বাসরোধের চেষ্টা করা হয়েছিল বছর কুড়ির তরুণীর, আর তাতেই চোট লাগে ঘাড়ে। শিরদাঁড়ার সেই ক্ষত থেকেই মৃত্যু! কিন্তু গোপনাঙ্গে ক্ষত কীসের? জবাব নেই রিপোর্টে। অথচ এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই উত্তরপ্রদেশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমার সুর চড়িয়েছেন, ‘অকারণে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে জাতপাতের অশান্তি তৈরি করতে চাইছে কিছু লোক, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে!’ এদিন থেকে অবশ্য স্বাভাবিক কারণেই নির্যাতিতার গ্রামকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ করে দেওয়া হয়েছে। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না সংবাদমাধ্যমকে। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের কাছে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। তাঁর সাফ দাবি, এমন ভয়াবহ ও মর্মান্তিক ঘটনার পরেও প্রধানমন্ত্রীর চুপ থাকা দেশের মেয়েদের জন্য একটি বিপদ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো দিয়েছেন আজাদ। সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করে ভীম আর্মির প্রধান বলেন, ‘যে উত্তরপ্রদেশের মানুষ তাঁকে নির্বাচিত করে সংসদে পাঠিয়েছেন, সেই রাজ্যের এক মেয়ে পাশবিক অত্যাচারের শিকার হয়েছে। মেয়েটিকে গণধর্ষণ করা হয়েছে এবং হত্যা করা হয়েছে। তাঁর হাড় ভেঙে গিয়েছিল। আর মৃত্যুর পর মেয়েটির মৃতদেহকে আবর্জনার মতো পুড়িয়ে দেওয়া হল! উত্তরপ্রদেশে এভাবে যখন মানবাধিকার লঙ্ঘন হল, তখন প্রধানমন্ত্রীর কি একটিও শব্দও খরচ করা উচিৎ নয়?’
আজাদ আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘না মেয়েটির, না তাঁর পরিবারের, কারও চিৎকারই শুনতে পাননি প্রধানমন্ত্রী। আপনি আর কতক্ষণ চুপ থাকবেন? তবে, জেনে রাখুন, আপনাকে কিন্তু উত্তর দিতেই হবে। বিকেল ৫টায় আপনার কাছ থেকে উত্তর চাইতে ইন্ডিয়া গেটে আসছি আমরা।’ যদিও ইন্ডিয়া গেটে হাথরসের ঘটনার পরই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই সেখানে কোনও প্রতিবাদ সভা করা যাবে না।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার হাথরাসের জেলাশাসক প্রবীণ লস্করের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে শাসানির সুরে নির্যাতিতার পরিবারকে তিনি বলছেন, ‘মিডিয়ার অর্ধেক তো আজই চলে গিয়েছে, বাকি অর্ধেক কাল চলে যাবে। শুধু আমরাই তোমাদের সঙ্গে থাকব। এ বার তোমার ব্যাপার, তুমি বয়ান বদল করবে কি না!’ পুলিশ-প্রশাসনের এমনই শাসানির সুর আর ময়নাতদন্তের ধোঁয়াশা ভরা রিপোর্ট- সব দেখে বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, ‘হুমকি দিয়ে কোন সত্য লুকোতে চাইছে যোগী প্রশাসন?’
এই বিষয়ে দলিত সমাজের দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে ।