নিউজ ডেস্ক :- কেরলের চার খ্রিস্টান সন্ন্যাসিনীর বিরুদ্ধে জোর করে ধর্মান্তরণের অভিযোগ এনে তাঁদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হল উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি স্টেশনে। অভিযোগের তির বিজেপির ছাত্র সংগঠন ABVP তথা ‘অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ’-এর বিরুদ্ধে। পরে পুলিশের কাছে তাঁরা ধর্মান্তরণ করাচ্ছেন না, এই মুচলেকা জমা দেওয়ায় ট্রেনে ওঠার অনুমতি দেওয়া হয় তাঁদের। ঘটনার জেরে কেরলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন একটি চিঠিতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) বিরুদ্ধে।
ঠিক কী ঘটেছিল? গত ১৯ মার্চ উৎকল এক্সপ্রেসে হরিদ্বার থেকে পুরী যাচ্ছিলেন দু’জন সন্ন্যাসিনী ও দুই শিক্ষানবিশ। সেই সময় আচমকাই এবিভিপির কয়েকজন মিলে তাঁদের ঘিরে ধরে। পরে ওই চারজনকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত মুচলেকা দিলে অব্যাহতি মেলে। ঘটনার একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। ২৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে সন্ন্যাসিনীদের ঘিরে রয়েছেন কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুলিশকর্মীরাও।
একজনকে বলতে শোনা যায়, ”আপনাদের জিনিসপত্র নিয়ে আসুন। আপনাদের ফেরত পাঠানো হবে। তেমন কোনও ব্যাপার নয়। চিন্তা করবেন না।” পরে আরও শোনা যায়, ”আপনারা যদি সত্যি বলে থাকেন, তাহলে ফেরত পাঠানো হবে।” পরে এক পুলিশকে এবিভিপির এক সদস্যকে বলতে শোনা যায়, তাঁরা নেতাগিরি করছেন। যদিও সেকথায় পাত্তা না দিয়ে ওই সদস্যকে বলতে শোনা যায়, ”আরে নেতাগিরি না করলে কী করে চলবে?”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এবিভিপির ওই সদস্যরা ঋষিকেশে ট্রেনিং ক্যাম্পে গিয়েছিল। ওই সন্ন্যাসিনীদের দেখে তাদের সন্দেহ হয়, সঙ্গের শিক্ষানবিশ দুই মহিলাকে ধর্মান্তরণের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে তারাই রেল পুলিশকে খবর দেয়। এই ঘটনায় প্রবল অসন্তুষ্ট কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। অমিত শাহকে লেখা চিঠিতে তিনি ক্ষোভ উগরে জানান, এই ধরনের ঘটনা দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ণ করে। এতদিনের ধর্মীয় সহিষ্ণুতার যে ঐতিহ্য তাকেও নষ্ট করে। গোটা বিষয়টি তাঁকে খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেন বিজয়ন। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে !