গেরুয়া সন্ত্রাসে হতবাক বাংলা এরা বাংলার সংস্কৃতির বিরোধী বিদ্যাসাগর আজ আক্রান্ত

Spread the love

নিউজ ডেস্ক,অয়ন বাংলা:- বাংলার মানুষ দেখল গেরুয়া সন্ত্রাস কাকে বলে ,এরা বাংলার সংস্কৃতি বাংলার ঐতিহ্য ,রবীন্দ্রনাথ নজরুল কাউকেই গেরুয়া সন্ত্রাস ছাড় দেয় না সেটা দেখল বাংলার মানুষ। রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এরাজ্য বা কলকাতা কম উত্তপ্ত হয়নি। কিন্তু মঙ্গলবার যা হল, তা প্রায় নজিরবিহীন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর রোড শো ঘিরে উত্তেজনার মাঝে হামলা চলল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর কলেজে আর ভাঙচুর করা হল বিদ্যাসাগরের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী মূর্তিও। আতঙ্ক যেন গ্রাস করল সন্ধ্যার কলকাতাকে।
ঘটনার পরপরই এই ধ্বংসাত্মক আক্রমণ নিয়ে সোচ্চার শহরের সুশীল সমাজ। সকলেই প্রায় একসুরে বলছেন, এই ঘটনা শুধু নিন্দাজনকই নয়, স্তব্ধ করে দেওয়ার মতো। কড়া শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

বরাবর মমতা তথা তৃণমূলের কট্টর সমালোচক বলে পরিচিত নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন বলছেন, ‘আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী। তৃণমূলেরও বিরোধী। কিন্তু ওরা বিজেপি নয়। বিজেপি আসলে গুন্ডাদের বাহিনী। অবাঙালি টানে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দর নাম নিতে পারেন শুধু, তাঁদের আদর্শ বুঝতে পারবেন না। আর বিদ্যাসাগর বোধহয় ওদের সিলেবাসের বাইরে। তাই চিনতে না পেরে মূর্তি ভেঙে ফেলেছে।’ সেইসঙ্গে তিনি স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, মমতার বিরোধিতা করলেও এবারের ভোটে বিজেপির চূড়ান্ত পরাজয় চান তিনি। তা শুধু এই বাংলায় নয়, গোটা দেশেই।
কবি জয় গোস্বামী ব্যথিত বোধ করছেন আজকের ঘটনায়। তাঁর কথায়, ‘এরা মানুষ? এরা তো আসলে বর্বর। হতবুদ্ধি হয়ে পড়ছি। এরা এখনও দেশ শাসন করে কীকরে? সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানো ছাড়া এদের আর কোনও কাজ নেই। এরা বুঝবে বিদ্যাসাগরের মর্ম?’ভাষাবিদ ও রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য পবিত্র সরকার বলেন, ‘বাঙালি হিসেবে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। এ আমরা কাদের ক্ষমতায় এনেছি দেশ শাসনের জন্যে। এরা বিদ্যাসাগরকেও শত্রু ভাবে!’
কৌশিক সেন, জয় গোস্বামীদের তুলনায় বরং অনেক বেশি আক্রমণাত্মক কবীর সুমন। তাঁর কথায়, ‘ভোটের জন্যেই বিজেপি এরকম অশান্তি করছে। এটা আরও বাড়বে। এবার ওদের মার খাওয়া উচিত।’
নাট্যব্যক্তিত্ব দেবেশ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বর্তমান অবস্থার সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন হিটলারের জার্মানির। তাঁর মতে, এ এক ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত পর্যায়। বিজেপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে, সারা দেশের অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হবে। আর বিজেপি যে হিন্দুত্ববাদের কথা বলে, তার সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই। এটা মানুষের বোঝা দরকার।’

শুধু বিশিষ্ট মানুষরাই নন, জনসাধারণের মনেও গভীর ছাপ ফেলেছে আজকের ঘটনা। তাঁদের অনেকেরই মতে, এই আস্ফালণ নিয়েই রাজ্যে ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখে বিজেপি? বিদ্যাসাগরের মতো ব্যক্তিত্বকে যারা সামান্য সম্মানটুকু দেখায় না, তারা ভাববে মানুষের কথা? আর পাঁচদিন পরেই কলকাতায় ভোট। তার আগেই মানুষের নিশানায় গেরুয়া সন্ত্রাস। এই ঘটনায় গোটা বাংলার মানুষ স্তম্ভিত হতবাক।এরা রাজনীতির নোংরা খেলায় দেশের সংস্কৃতি ঐতিহ্য ধ্বংশ করে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.