বেহালায় সভামঞ্চে স্বাস্থ্যসাথী-র জালিয়াতি আর তৃণমূল কাউন্সিলরদের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি নেতারা
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বিজেপি’র দক্ষিণ কলকাতা জেলা ক্লাব সেলের উদ্যোগে বেহালায় ইলোরা সিনেমার সামনে দুঃস্থ মানুষদের কম্বল বিতরণের একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন ক্লাব সেলের কনভেনর তরুণ দাস (রাজু) ও কো-কনভেনর দিলীপ কুমার গুপ্তা। এই অনুষ্ঠানের সভামঞ্চে তৃণমূল কাউন্সিলরদের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি আর স্বাস্থ্যসাথী-র জালিয়াতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপি’র নেতারা। এইসঙ্গেই প্রায় ২০০ জন দুঃস্থ মানুষকে কম্বল বিতরনের কর্মসূচি পালন করলো বিজেপির ক্লাব সেল।
এদিনের এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাকেশ সিং, দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি শঙ্কর শিকদার, সহ সভাপতি মেঘনাথ পোদ্দার, ক্লাব সেলের কনভেনর তরুণ দাস (রাজু) ও কো-কনভেনর দিলীপ কুমার গুপ্তা, আইনজীবি সেলের নেতা জিতেন পাল, শীর্ষেন্দু ব্যানার্জী, অমিত লাট, রাজ্য নেতা ভক্তিনাথ মণ্ডল, সঞ্জয় চ্যাটার্জী প্রমুখ।
এদিনের সভায় জেলা সভাপতি শঙ্কর শিকদার বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে তৃণমূল সরকার। স্বাস্থ্যসাথী’র কার্ড নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য গেলে বেড পাওয়া যায়না। স্বাস্থ্যসাথী’র সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে সরকারি হাসপাতালকেও। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, সরকারি হাসপাতালে বিনাখরচে স্বাস্থ্যসাথী’র পরিষেবা পাওয়া যাবে….” শঙ্করবাবু বলেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা তো এমনিতেই ফ্রী ! এখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের কি প্রয়োজন ? এইসব মিথ্যাচার করে জনগনকে ধোঁকা দিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আসলে স্বাস্থ্যসাথীর নামে জনগণের সঙ্গে জালিয়াতি করছে সরকার, এমনটাই অভিযোগ তার।
বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রাকেশ সিং বলেন, “আমার নামে রাজ্য সরকার প্রায় ৩৮/৩৯ টা ক্রিমিন্যাল মামলা রুজু করেছে। অথচ আমি বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্য সভা সমিতিতে যাচ্ছি, কই পুলিশ তো আমাকে গ্রেফতার করছে না ? আসলে সবই মিথ্যা মামলা। আমাদের নেতা-কর্মীদের নামেও মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।” তিনি সমস্ত বিজেপি কর্মীদের সংগঠিত হতে পরামর্শ দেন।
এই সভায় জেলা বিজেপি’র আইনজীবি সেলের নেতা জিতেন পাল তৃণমূল কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সোচ্চার হন। তার অভিযোগ, ১০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা পান কাউন্সিলররা। অথচ অধিকাংশ তৃণমূল কাউন্সিলরের কোটি কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি-সম্পত্তি। কোনও কোনও কাউন্সিলরের ২/৩ টি করে গাড়ি, কোটি কোটি টাকা ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স… এসব আসে কোত্থেকে ? ভোটে দাঁড়ানোর আগে একশ্রেণীর কাউন্সিলরের বিড়ি খাওয়ার পয়সা ছিল না, একটা সাইকেল কেনারও ক্ষমতা ছিল না। এখন তারা কোটি কোটি টাকার মালিক। এসবই কাটমানি আর দুর্নীতির টাকা। বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এলেই এইসব দুর্নীতির তদন্ত হবে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।