বিজেপি’র দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে আসন্ন পুর নির্বাচনে টিকিট বিক্রির অভিযোগ, ফ্লেক্সের হোর্ডিং-এ ছেয়ে গেল ন্যাশনাল লাইব্রেরীর গেট থেকে শুরু করে দেওয়ালও
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : বিজেপি’র দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি শংকর শিকদারের অপসারণের দাবি তুলে ও টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুলে ৩০ অক্টোবর ন্যাশনাল লাইব্রেরীর গেট থেকে শুরু করে চারিদিকের দেওয়ালে ফ্লেক্সের ব্যানার ও হোর্ডিং লাগিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয় দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপি’র একাংশ। উল্লেখ্য, এইদিন ন্যাশনাল লাইব্রেরীর কনফারেন্স হলে বিজেপির একটি সভা ছিল। উপস্থিত ছিলেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি শংকর শিকদার, রাজ্যনেতা রাজকমল পাঠক সহ বিজেপির রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি শংকর শিকদারের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অভিযোগ, আসন্ন পুরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিজেপি’র হয়ে যারা ভোটে লড়বেন, তাদের টিকিট বিক্রি করবেন জেলা সভাপতি। এই গোষ্ঠীর দাবি প্রার্থীদের কাছে টিকিট বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করবেন জেলা সভাপতি শংকর শিকদার। বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় চরম বিপর্যয়ের পরই দলের একাংশ ক্ষুব্ধ এখন জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অভিযোগ, বেহালা পূর্ব ও পশ্চিম সহ জেলা সভাপতির অধীনে থাকা ১১ টা বিধানসভা আসনেই চরম বিপর্যয় ঘটেছে বিজেপি’র। শুধু তাই নয়, টাকা নয়-ছয়ের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। দক্ষিণ কলকাতা জেলায় বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি’র প্রার্থী পিছু লক্ষ লক্ষ টাকা স্যাংশন হওয়া সত্বেও সে তুলনায় কিছুই প্রচার করা হয়নি। তাহলে সেই টাকা গুলো গেল কোথায় ? দলীয় কর্মীদের অধিকাংশ কর্মীই দলের প্রচারের কাজ করেও টাকা পাননি…. এমনও অভিযোগ তুলছেন শংকর শিকদারের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর দলীয় কর্মীরা। আবার কিছু কিছু কর্মী শংকর শিকদারের সহায়তায় কাজ না করেও হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলেও অভিযোগ। তাই ইতিপূর্বে কয়েকটি সভামঞ্চে শংকর শিকদারকে বারংবার হেনস্থা করার ঘটনাও ঘটেছে।
অন্যদিকে, জেলা সভাপতি শংকর শিকদারের লবির কর্মীদের বক্তব্য, শুধু এই জেলাতেই নয়, কলকাতা সহ অন্যান্য জেলাতেও বিজেপি’র বিপর্যয় ঘটেছে। তাই শংকর শিকদারকে দোষারোপ করাটা কোনও মতেই সঙ্গত: নয়। এই লবির অভিযোগ, পুর নির্বাচনে এখন দলের টিকিট পাওয়ার আশায় একশ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী কর্মী এসব নোংরামো করে বেড়াচ্ছে। তারা তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুরভোটে বিজেপির কর্মীদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দলের সৃষ্টি করছে। আর টিকট বিক্রির অভিযোগ তুলে তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা অপপ্রচার করছে বলে শংকর শিকদারের লবি’র দাবি। তবে জেলা বিজেপি সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, যে ওয়ার্ডে যে দলীয় কর্মীর পারফরম্যান্স ভালো দল তাকেই টিকিট দেবে। টিকিট বিক্রির কোনও প্রশ্নই নেই। এব্যাপারে শংকর শিকদারকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার কোনো প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি।
এখন দেখার বিষয় এটাই যে, কর্মীদের পারফরমেন্সের ভিত্তিতে দল টিকিট দেয়, নাকি বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর অভিযোগের সত্যতা মেনে টিকিট বিক্রি হয় ! আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা….. তারপরই পুর ভোটের দামামা বাজতে চলেছে। সম্ভবত: ছট পুজোর পরই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে চলেছে রাজ্যের নির্বাচন কমিশন, এমনই খবর বিশেষ সূত্রের।