বেহালায় মৃতদেহ বাড়িতে পড়ে রইলো ১৫ ঘণ্টা, তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অমানবিকতার অভিযোগ
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : করোনা-আমফান- ত্রাণকাণ্ড নিয়ে শাসকদলের নেতা-নেত্রী থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে যখন একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই বেহালায় করোনা’য় এক ব্যক্তির মৃতদেহ বাড়িতে পড়ে থাকায় এবার সরাসরি অভিযোগের আঙ্গুল উঠলো স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অশোকা মণ্ডলের বিরুদ্ধে। রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিষয়টি জানার পরই বলেন, “কাউন্সিলর অশোকা মণ্ডল ঠিক কাজ করেন নি। মৃতদেহ সৎকারের জন্য আমি উদ্যোগ নিচ্ছি। থানার ওসি, ডিসি সকলকেই পদক্ষেপ নিতে বলেছি।” এরপর সোমবার বিকেল ৩-৪০ মি: নাগাদ সরকারি উদ্যোগে করোনা’র মৃতদেহবাহী গাড়িতে করে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। কাউন্সিলরের চরম অমানবিকতায় প্রায় ১৫ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহ বাড়িতে পড়ে থাকায় এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ।
ঘটনায় প্রকাশ, বেহালার ১১৯ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ৮২, সাহাপুর মেন রোডের ঠিকানায় রবিবার রাত প্রায় ১১টা নাগাদ করোনা’য় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। মৃতের নাম গোপাল মণ্ডল (৬০)। অভিযোগ, মৃতের বাড়ি থেকে রাতে বার বার স্থানীয় কাউন্সিলর অশোকা মণ্ডলের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলেও তার বাড়ি থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় এব্যাপারে কাউন্সিলরের কিছু করার নেই।
জানা গিয়েছে, বেহালার সাহাপুর মেন রোডে একই বাড়িতে সপরিবারে থাকেন মৃত গোপাল মণ্ডল ও তার স্ত্রী, গোপালবাবুর ভাই বৈদ্যনাথ, বিশ্বনাথ ও তার স্ত্রী এছাড়া গোপালবাবুর বৃদ্ধ পিতা, যার বয়স প্রায় ৯৩ বছর। তাদের পরিবারিক সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো আগে ছোট ভাই বিশ্বনাথের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরই তাকে এক তলার একটি ঘরে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এর পর বাড়ির অন্যান্য সদস্যদেরও করোনা ধরা পড়ে। তারা এখন সকলেই হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত: রবিবার রাতেই গোপালবাবুর লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। তাতে কোভিদ-১৯ পজিটিভ পাওয়া যায়। এই রিপোর্ট আসার পরই গোপালবাবু বেশ কিছুটা ঘাবরে যান। রাত প্রায় ১১টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু ঘটে। অভিযোগ, এরপরই ঘটনাটি স্থানীয় কাউন্সিলরকে বারংবার জানালেও তার কোনও মানবিক প্রয়াস দেখতে পাননি বাড়ির লোকেরা। উল্টে তাদের নাকি বলা হয়, কাউন্সিলর এব্যাপারে কিছু করতে পারবেন না। উপরন্ত কাউন্সিলর ঘটনাস্থলে একবারের জন্যও আসেননি বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের।
অন্যদিকে, স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অশোকা মণ্ডল জানান, তার নামে মিথ্যা অভিযোগ করছেন ওই বাড়ির সদস্যরা।