মিনার্ভায় মঞ্চস্থ হলো চাকদহ নাট্যজন-এর “পরদেশী”
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : সোমবার (১৬ মে) সন্ধ্যায় কলকাতার মিনার্ভা থিয়েটারে মঞ্চস্থ হলো “পরদেশী” নামের একটি নাটক। নাটকটির মূল প্রেক্ষাপটে তুলে ধরা হয়েছে, “এনআরসি” নামক এক বিভীষিকার বাস্তব চিত্র। কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক লাগু হওয়া এই আইনে রাষ্ট্রযন্ত্রের অবর্ণনীয় অত্যাচারের কাহিনী। বলা যায়, এনআরসি’র বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার প্রতিফলন ঘটেছে চাকদহ নাট্যজন-এর এই নাটকে।
নাটকে দেখা গেল — বহুদিন আগেই আসামের শিলচর থেকে কর্মসূত্রে কলকাতায় এসেছিলেন অধ্যাপক সুপ্রিয় মজুমদার। পরবর্তীতে কলকাতায় স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে দিনগুলি সুখ-স্বাচ্ছন্দেই কাটছিল তার। হঠাৎ কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক লাগু হলো “এনআরসি” নামক এক বিভীষিকাময় আইন। আসামের মানুষগুলির উপর শুরু হলো রাষ্ট্রযন্ত্রের চরম অত্যাচার …. যাদের নাম এনআরসি’র তালিকায় নেই, তাদের ছেড়ে যেতে হবে পৈতৃক ভিটেমাটি। সুপ্রিয়বাবুর একসময়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও দরিদ্র প্রতিবেশী শিলচরের মালতীর পরিবারের উপরেও নেমে এলো এই খাঁড়া।
রেহাই পেলনা লোকের বাড়িতে খেটে খাওয়া শিলচরের বাসিন্দা পৌড়া মালতীর পরিবার। ছেলে রিকশা চালায়। স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে চরম অনটনের সংসার তার ছেলের। মালতীও এখন খুবই অসুস্থ, নার্ভের পেসেন্ট। তার উপর এনআরসি’র তালিকায় ওদের নাম নেই। বাপ-দাদার ভিটে-মাটি থেকে উচ্ছেদ হতে হবে তাদের। রাষ্ট্রযন্ত্রের এই অত্যাচার থেকে বাঁচতে ওরা আশ্রয় নেয় কলকাতায়, এক সময়ের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী সুপ্রিয় মজুমদারের বাড়িতে… গ্যারাজ ঘরে। কিন্তু বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া নিয়ে সুপ্রিয়বাবুর সঙ্গে তার স্ত্রী ও মেয়ের মনমালিন্য শুরু হয়।
অসুস্থ মালতী বিষয়টি বুঝতে পারে। তাই ভোর রাতেই তারা সুপ্রিয়বাবুর বাড়ি ছেড়ে শিলচরের উদ্দেশ্যেই রওনা দেয়। কিন্তু সীমান্ত রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ে যায় ওরা…. তারপর….
তারপর ওদের উপর কি অমানুষিক অত্যাচার শুরু হলো …. তা জানতে হলে অবশ্যই দেখতে হবে “পরদেশী” নামের এই নাটকটি। নাটকের নাট্যকার তীর্থঙ্কর চন্দ, নির্দেশনায় দেবব্রত ব্যানার্জী, সামগ্রিক পরিকল্পনা ও রূপায়ণে সুমন পাল। অভিনয়ে রয়েছেন, প্রবীর দত্ত, সুরঞ্জনা দাশগুপ্ত এবং নাট্যজনের অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ।
ছবি : রিমা শিকদার।