ধর্ম,জাতি ও লিঙ্গগত বৈষম্যের অভিযোগ এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়: জনস্বার্থ মামলার প্রস্তুতি

Spread the love

ধর্ম,জাতি ও লিঙ্গগত বৈষম্যের অভিযোগ এবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়:
জনস্বার্থ মামলার প্রস্তুতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তরপ্রত্রে পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরের সঙ্গে নাম লেখা বাধ্যতামুলক। কিন্তু মাদ্রাসা পর্যদের পরীক্ষায় উত্তরপত্রে নাম লিখতে হয় না। শুধু রোল নম্বর লিখতে হয়। রোল নম্বরই হয় পরীক্ষার্থীর পরিচয়। অভিযোগ উঠছে, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতায় নাম লেখার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে। এর ফলে বিশেষ শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা জাতি, ধর্ম ও লিঙ্গগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাই, অবিলম্বে মাধ্যমকি ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্রে নাম লেখা বন্ধ করার দাবি উঠেছে। এই দাবিতে জনস্বার্থ মামলার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
এবারে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হওয়ার পরেই এই বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ উঠেছে। বহু পরীক্ষার্থীর অভিভাবক মনে করছেন, নম্বরের ক্ষেত্রে এই বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। যোগ্যতার ভিত্তিতে নম্বরও আসছে না। তথ্য জানার অধিকার আইনে পরীক্ষার্থীরা নিজেদের খাতা দেখলেই নম্বর বাড়ছে। স্কুর্টনি করতে গিয়ে অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীর নম্বর বেড়ে যায়। আসলে, এর পেছনে বৈষম্য তৈরি করার মানসিকতা কাজ করছে বলে অভিযোগ। এটাকে একটি মারাত্বক সমস্যা বলেও মনে করছেন অনেকে।
উলেখ্য, সর্বভারতীয় স্তরে সিবিএসই, আইসিএ্সই, এমনকি মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় উত্তরপত্রে পরীক্ষার্থীদের নাম থাকে না। রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেওয়া উত্তরপত্র যায় পরীক্ষকের কাছে। এর ফলে পরীক্ষার্থীর ধর্মীয়, জাতিগত বা লিঙ্গগত পরিচয় জানতে পারেন না পরীক্ষকরা। সেক্ষেত্রে বৈষম্য করার সম্ভবনা থাকে না। এমনকি বাইরের রাজ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেও এই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। অনেক জায়গায় রেজিস্ট্রেশন বা রোল নম্বরও দেওয়া উত্তরপত্র পাঠানো হয় না পরীক্ষকের কাছে। পরীক্ষার শেষে উত্তরপত্রে একটি কোড নম্বর দেওয়া হয়। রোল নম্বরের লেখার অংশটিকে আড়াল করে কোড নম্বর বসিয়ে দেওয়া হয়। এই পদ্ধতিকেই স্বাগত জানাচ্ছে বাংলাও। কারণ অতিতে, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রেও পরীক্ষার খাতায় শুধু রোল ও রেজিস্ট্রেশন লেখার চল ছিল। ১৯৯৫ সাল থেকে খাতায় নাম লেখা শুরু হয়। অভিযোগ, নাম দেখে বহু পরীক্ষক খাতার মূল্যয়ন করে থাকেন। এরফলে কোনও বিশেষ পরীক্ষার্থী বাড়তি সুবিধা পায়। আবার বহু মেধাবি পড়ুয়া ধর্ম, জাতি ও লিঙ্গ গত বৈষম্যের শিকার হয়ে যায়। যেটা ভারতীয় সংবিধানের ১৫ নম্বর ধারার সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। এর প্রতিকার চেয়ে ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন শিক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে থাকা বহু সংগঠন। মামলা করার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠন বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের রাজ্য সভাপতি ইসরারুল হক মন্ডল বলেন, ‘বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। জনস্বার্থ মামলা করার কথাও বলছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। আইনজীবীদের পরামর্শে পদক্ষেপ নেব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.