নিউজ ডেস্ক: – নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যু নিয়ে বিশেষজ্ঞ থেকে বুদ্ধিজীবি ও নেতাজী গবেষকরা কালঘাম ছুটিয়েও কোন মৃত্যু নিয়ে সুরাহা করতে পারেন নি । অথচ কংগ্রেস বিজেপি র নেতারা আজ 18 ই আগষ্ট নেতাজী র প্রয়াণ দিবস হিষাবে ঘোষণা করে দিল। সকাল থেকেই একের পর এক টুইট। নেতাজির কালজয়ী সব উক্তির সঙ্গে ভারী ভারী শব্দ ব্যবহার করে তাঁর প্রশংসা। উপলক্ষ, নেতাজির ‘মৃত্যুদিন’। হ্যাঁ, সেই নেতাজি যার মৃত্যু নিয়ে নিশ্চিত কোনও তথ্য বা কোনও প্রমাণ নেই। অথচ, কংগ্রেস এবং বিজেপি দুই দলের নেতারাই ১৮ আগস্ট দিনটিকে সুভাষচন্দ্র বোসের ‘প্রয়াণ দিবস’ হিসেবে পালন করা শুরু করে দিলেন। সুভাষের প্রতি নিজেদের ‘ভালবাসা’ আর ‘শ্রদ্ধা’ জাহির করতে গিয়ে রীতিমতো বিতর্ক বাধিয়ে বসল দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল।
মঙ্গলবার সকালে কংগ্রেসের দলীয় টুইটার হ্যান্ডেল থেকে টুইট করে বলা হল,”নেতাজি একজন জাতীয় নায়ক। দেশের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতা আজকের প্রজন্মের কাছে আদর্শ। তাঁর প্রয়াণ দিবসে আমরা আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাই।” এরপর হার্দিক প্যাটেল থেকে শুরু করে কংগ্রেসের ছোট-বড় নেতারা নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্ট করা শুরু করলেন। বিজেপি নেতারাও পিছিয়ে রইলেন না। ‘প্রয়াণ দিবসে’ নেতাজিকে স্মরণ করলেন খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশাঙ্ক । তিনি লিখলেন,”আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রতিষ্ঠাতা, অদ্বিতীয় যোদ্ধা এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অগ্রণী সেনানি নেতাজিকে তাঁর পূণ্য তিথিতে কোটি কোটি প্রণাম।” আরেক শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেত্রী তথা রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজেকেও একই ভুল করতে দেখা গেল। টুইট করে তিনিও নেতাজির ‘মৃত্যুদিন’ পালন করলেন। টুকটাক টুইট করলেন গেরুয়া শিবিরের ছোটখাটো নেতারাও। অর্থাৎ বিজেপির এই নেতারাও একপ্রকার ঘোষণা করে দিলেন ১৮ আগস্টই নেতাজির মৃত্যু হয়েছিল।
নেতাজির মৃত্যু নিয়ে রহস্যের শেষ নেই। ১৮ আগস্ট ১৯৪৫ সালে তাইওয়ানে একটি বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু, এই দাবির স্বপক্ষে এখনও পোক্ত কোনও প্রমাণ কোনও বিশেষজ্ঞই পেশ করতে পারেননি। অনেকেই মনে করেন সেদিনের বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি মারা যাননি। অন্তর্হিত হয়েছিলেন শুধু। তাহলে, এহেন বিতর্কিত বিষয় নিয়ে কেন কংগ্রেস বা বিজেপি নেতারা টুইট করলেন? তাঁরা কি ইতিহাস জানেন না, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে নেতাজিকে অসম্মান করা হচ্ছে? কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নেতাজিকে অসম্মান করার অভিযোগ নতুন কিছু নয়। নেহেরু-গান্ধীদের সম্মান করতে গিয়ে সুভাষচন্দ্রকে কংগ্রেস উপযুক্ত সম্মান দেয়নি বলেই অভিযোগ তোলে বিরোধীরা। প্রশ্ন হল, কংগ্রেসের পাশে নেতাজিকে অসম্মানকারীদের তালিকায় কি বিজেপিও (BJP) নাম লেখাল?
কংগ্রেস অবশ্য শুরু থেকেই বিশ্বাস করে সেই বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে সুভাষচন্দ্রের। ১৯৪৬ সালে খোদ বল্লবভাই প্যাটেলও একথা জানিয়েছিলেন। মোরারজি দেশাই প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালীনও এই একই বয়ান দিয়েছিলেন। বস্তুত এ নিয়ে অনেক কমিটি, কমিশন তৈরি হয়েছে। কিন্তু আসলে এখনও দেশনায়কের মৃত্যুর কোনও ঘোষিত তারিখ নেই।
এবার এই নিয়ে শুর হয়েছে বিতর্ক ১৮ ই আগষ্ট কি নেতাজী মৃত্যুদিন চলছে চাপান উতর ।