নিউজ ডেস্ক,অয়ন বাংলা:- দিল্লীতে বাংলার জন্য
বড়সড় চমক লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা হচ্ছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিজেপির আঠারো জন সাংসাদ বাংলা থেকে গেল অথচ বঞ্চিত বাংলা ,মাত্র দুটি প্রতি মন্ত্রী ,কিন্তু কংগ্রেস বাংলাকে দিল যোগ্য সম্মান।
রবিবার সর্বদল বৈঠক শেষে নরেন্দ্র মোদী পিঠ চাপড়ে দিয়েছিলেন বহরমপুরের সাংসদের, বলেছিলেন ‘অধীরদা বড় যোদ্ধা’। কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীও সেই ‘যোদ্ধা’কে স্বীকৃতি দিতে ভুল করলেন না। মঙ্গলবার সকালে অধীরকে ডেকে পাঠিয়ে বৈঠক করলেন তিনি। বৈঠক শেষে লোকসভায় গিয়ে সেই আসনটায় বসলেন অধীর, যে আসনে গত পাঁচ বছর বসছিলেন মল্লিকার্জুন খড়্গে।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা
লোকসভার লড়াইয়ে বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর লড়াই নিয়ে কোনও প্রশ্নই থাকতে পারে না। গোটা রাজ্যের হাওয়া যখন তৃণমূল ও গেরুয়ায় ভাগ হয়েছে এহেন সময়ে বলা যেতে পারে একার লড়াইয়েই বহরমপুরে নিজের দুর্গ রক্ষা করেছেন অধীর চৌধুরী। তাঁর এহেন লড়াইয়ে তারিফ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মিলেছে পুরস্কারও। মঙ্গলবার লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এই সম্মান পাওয়ার পর এবার নিজের প্রতিক্রিয়া দিলেন অধীর।
গতকাল অবধি ঘুণাক্ষরেও কেউ টের পাননি কংগ্রেসের দলনেতার নাম। মঙ্গলবার সকালে দিল্লির ১০ জনপদে অধীরকে ডেকে পাঠান সোনিয়া। তার ঠিক পরেই জানা যায় মল্লিকার্জুন খাড়গের পর লোকসভায় কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা পদ পাচ্ছেন অধীর। এই কথা ঘোষণার পর সাংবাদিকদের সামনে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় অধীর চৌধুরী বলেন, ‘আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছে দল। বলা হয়েছে সামনে থাকতে। আমি বলেছি ঠিক আছে। পদাতিক সৈনিক আমি। আর সৈনিকরা আগেই থাকে। একজন পদাতিক সৈনিক হিসাবে সামনে থেকেই লড়াইটা করব।’ হ্যাঁ সৈনিকই বটে তিনি। আর লড়াইটাও তিনি বেশ ভালোই করতে পারেন। তাই মোদী ম্যাজিকে যখন একের পর এক দাপুটে কংগ্রেস নেতারা যখন মাথা নত করেছে তখন বুক ফুলিয়ে লড়াইটা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। আর জয়ও এসেছে তাঁর ঝুলিতে।
উল্লেখ্য, ভারতবর্ষের প্রথম রাজনৈতিক দল কংগ্রেসে অধীর চৌধুরী হলেন দ্বিতীয় বাঙালি যিনি লোকসভায় দায়িত্ব পেলেন দলনেতার। এর আগে এই দায়িত্ব পেয়েছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তবে তিনি যখন দায়িত্ব পেয়েছিলেন তখন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। আর এখানে বিরোধী দলনেতা হিসাবে লোকসভা কাঁপাবেন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী।
গত পাঁচ বছর যিনি লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা ছিলেন, সেই মল্লিকার্জুন খড়্গে এ বার আর জিততে পারেননি। গোটা দেশে কংগ্রেসের আরও অনেক রথী-মহারথী হেরে গিয়েছেন। তাই দীর্ঘ দিন ধরে লোকসভায় রয়েছেন, এমন সাংসদের সংখ্যা কংগ্রেস সংসদীয় দলে এ বার হাতে গোনা। সনিয়া গাঁধী নিজে লোকসভায় রয়েছেন ২০ বছর ধরে। অধীর চৌধুরীও রয়েছেন ২০ বছর ধরে। আর রাহুল গাঁধী রয়েছেন ১৫ বছর। লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরে কংগ্রেস সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন হিসেবে সনিয়াকেই বেছে নেওয়া হয়। সেই বৈঠকে এ-ও স্থির হয় যে, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা কে হবেন, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত সনিয়া গাঁধীই নেবেন। সনিয়া গাঁধী সিদ্ধান্তটা মঙ্গলবার নিয়ে নিলেন। অধীর চৌধুরীকে মঙ্গলবার সকালে ডেকে পাঠালেন ১০ জনপথের বাসভবনে। সেই বৈঠকেই অধীরকে এই নতুন দায়িত্বের কথা জানালেন। বৈঠক সেরে বেরিয়ে লোকসভায় কংগ্রেসের জন্য নির্ধারিত আসনের একেবারে সামনের সারিতে বসলেন অধীর।