নিউজ ডেস্ক:- রবিবারের পর সোমবার। নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষে রবিবারই একদফা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল পূর্ব দিল্লির জাফরাবাদ, মৌজপুর ও আরও কয়েকটি এলাকায়। বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র টুইট করে বলেছিলেন, যতক্ষণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে থাকবেন, ততক্ষণ তাঁরা অশান্তি করবেন না। বাস্তবে, সোমবারের গোলমালের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল রবিবার রাতেই। তখন পূর্ব দিল্লির কয়েকটি এলাকায় বাইরে থেকে আসছিল ট্রাকভর্তি ইট। সেই সঙ্গে স্লোগান উঠছিল, জয় শ্রীরাম।
সোমবার মৌজপুর চকে সকাল থেকেই মাইকে গান বাজছিল, ‘যো মাঙ্গেঙ্গে আজাদি দেশ মে, ভেজো পাকিস্তান উনহে’, ‘ভারত কি অভিমান হ্যায় হিন্দু ভগোয়াধারী আয়েঙ্গে, পুকারতি মা ভারত খুন সে রং ভরো গোলিয়োঁ কি নাম কি’। তার অর্থ, হিন্দুরাই ভারতের গর্ব। গেরুয়া ঝান্ডাধারীরা আসবে। ভারতমাতা ডাক দিয়েছেন, বুলেট দিয়ে রক্তের রং-এ রাঙিয়ে দাও।
মৌজপুর-জাফরাবাদ এলাকায় সোমবার সকাল থেকেই পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু তারা ওই গান বন্ধ করেনি। বেলা ১২ টা নাগাদ শুরু হয় গন্ডগোল। মৌজপুর মেট্রো স্টেশন রবিবার থেকে বন্ধ ছিল। সোমবার বেলায় নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক ও বিরোধীদের দু’টি ছোট গোষ্ঠী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে পাথর ছোঁড়াছুড়ি হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বেলা দু’টো নাগাদ নাগরিকত্ব আইনের সমর্থক একটি মিছিল জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশনের দিকে যেতে চেষ্টা করে। নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী একটি মিছিল জাফরাবাদ থেকে যেতে চেষ্টা করে মৌজপুর চৌকের দিকে। দু’টি জায়গার মধ্যে দূরত্ব এক কিলোমিটার। দু’টি মিছিল মুখোমুখি এসে পড়লে অশান্তি হবে আঁচ করে পুলিশ মাঝপথে তাদের থামিয়ে দিতে চায়। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন হওয়ার আগেই দু’টি মিছিলের মধ্যে শুরু হয় পাথর ছোঁড়াছুড়ি। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। হুড়োহুড়িতে কয়েকজন পদপিষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। একটি অটোয় আগুন লাগানো হয়। কারা আগুন লাগিয়েছিল, এখনও স্পষ্ট নয়।
একটি ভিডিও ছবিতে দেখা যায়, লাল শার্ট পরা এক যুবক রিভলভার হাতে জাফরাবাদ থেকে মৌজপুরের দিকে হেঁটে আসছে। সে দিল্লি পুলিশের এক কর্মীর মুখোমুখি হল। ওই পুলিশকর্মী ছিলেন নিরস্ত্র। পরে যুবকটি পুলিশের থেকে একটু দূরে গিয়ে শূন্যে ফায়ার করল। তাকে পরে পুলিশ আটক করেছে।
বিকাল পাঁচটা অবধি ওই এলাকায় পাথর ছোঁড়াছুড়ি চলে। তারপর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। মঙ্গলবারো জাফরাবাদ থেকে মৌজপুরের মধ্যে ৮০০-৯০০ পুলিশ ও আধা সেনা মোতায়েন রয়েছে।