ডেলিভারি বয় মুসলিম হওয়ায় খাদ্য সামগ্রী নিতে অস্বীকার অবশেষে গ্রেপ্তার কর্তা

Spread the love

ডিজিটাল ডেস্ক:- গোটা দেশে করোনা আক্রান্তের জেরে কাঁপছে আর ভয়াবহতার মধ্যেই জাত পাত আরোও সক্রিয় হয়ে উঠছে। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় বাড়ি থেকে বেরতে মানা। তাই বাধ্য হয়ে অনলাইনেই খাবারদাবার কিনছেন বেশিরভাগ মানুষ। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে বেশ কয়েকজন বাড়ির দরজায় পৌঁছে দিচ্ছেন জিনিসপত্র। সেই ডেলিভারি বয়কে কৃতজ্ঞতা জানানো তো দূর, শুধুমাত্র মুসলমান হওয়ায় তাঁর হাত থেকে জিনিসপত্র নিতে অস্বীকার করল মুম্বইয়ের থানের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টার অভিযোগে পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনাটি গত মঙ্গলবারের। ওইদিন থানের মীরা রোডের শ্রুস্থি কমপ্লেক্সের বাসিন্দা বছর একান্নর এক ব্যক্তি অনলাইনে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী অর্ডার করেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ডেলিভারি বয় জিনিসপত্র তাঁকে দিতে আসেন। তাঁর হাতে গ্লাভস, মাস্ক-সহ যাবতীয় সতর্কতা নিয়েছিলেন তিনি। ৩২ বছর বয়সি ওই ডেলিভারি বয় বাড়িতে পৌঁছে কলিং বেল বাজান। ওই ব্যক্তির স্ত্রী দরজা খোলেন। তালিকা মিলিয়ে জিনিসপত্র ঘরে ঢোকানোর বন্দোবস্ত করছিলেন তিনিই। এমন সময় তাঁর স্বামী দরজার সামনে বেরিয়ে আসেন। ডেলিভারি বয়ের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুরু করেন তিনি। ডেলিভারি বয়ের নাম শুনে তিনি বুঝতে পারেন ওই যুবক মুসলমান। এরপর তিনি স্ত্রীকে বলেন কিছুতেই ওই জিনিসপত্র বাড়িতে ঢোকানো যাবে না।

আচমকা গৃহকর্তা কেন এমন ব্যবহার করছেন, তা প্রথমে বুঝতে পারেননি ওই ডেলিভারি বয়। প্রশ্ন করেন তিনি। তাতেই ওই ব্যক্তি উত্তর দেয়, ডেলিভারি বয় মুসলমান হওয়ায় কিছুতেই তাঁর হাত থেকে নেওয়া জিনিস ঘরে ঢোকাবেন না তিনি। জিনিসপত্র ফেরতও পাঠিয়ে দেন। ওই ডেলিভারি বয় বলেন, “আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি বাড়ি জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছি। অথচ আমি মুসলমান বলে আমার থেকে ডেলিভারি নিলেন না ওই ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির ব্যবহার আমার অত্যন্ত খারাপ লেগেছে।” এরপরই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ডেলিভারি বয়। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫(এ) ধারায় মামলা রুজু করে। ওই ব্যক্তি গ্রেপ্তারও করে পুলিশ।

করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন গোটা দেশ। ভাইরাসের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু সেখানেও বারবার বেশ কয়েকজনের আচরণে তৈরি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি রোগমুক্তিতে সামাজিক দূরত্ব স্থাপনের মাধ্যমে কি সকলের থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছি আমরা। ধর্মের ঊর্ধ্বে মানবতা। তবে কি মানবতারই অবক্ষয় হচ্ছে?

মানবতা আজ আরো বেশী করে বিপন্ন হয়ে উঠছে।

সৌজন্য:- সংবাদ প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.