নিউজ ডেস্ক :-; ইয়াসের ল্যান্ডফল থেকে রেহাই পেলেও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সঙ্গে জলের তলায় পূর্ব মেদিনীপুরও। সাইক্লোনের রূপ কতটা সাংঘাতিক তা প্রত্যক্ষ করল দিঘা। দিঘার সমুদ্রে যে জলোচ্ছ্বাস দেখল সারা বাংলা, তা গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি বলে জানা গেছে। শুধু ইয়াস নয়, এদিন জলোচ্ছ্বাসের নেপথ্যে ছিল ভরা কোটাল এবং পূর্ণিমাও। আজ আবার চন্দ্রগ্রহণও পড়েছে। এই ত্র্যহস্পর্শে ঢেউ উঠল নারকেল গাছের মাথা ছাড়িয়ে।
বহু অর্থ খরচ করে দিঘাকে নতুন করে সাজিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিশেষ করে ওল্ড দিঘাকে মনোমুগ্ধকর বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ইয়াসের দাপটে সেই সমুদ্র শহরের বিপর্যস্ত অবস্থা। কন্ট্রোল রুম থেকে দিঘার মানুষের জন্য বার্তা দিলেন মমতা ব্যানার্জি।
তিনি বললেন, ‘বাংলায় বন্যা পরিস্থিতি। সব মিলিয়ে ১৫ লক্ষ মানুষকে বের করতে পেরেছি। ভরা কোটালে ডুবে যাচ্ছে বহু এলাকা। জলের তোড় ভয়াবহ। দিঘা থেকে লোক সরাচ্ছি। দিঘার ২০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। চারদিকে নজর রাখা হচ্ছে। আজকের দিনটা কষ্ট করে সাইক্লোন সেন্টারে থাকতে হবে।’
বুধবার সকাল ৯টা ১৫ নাগাদ বালেশ্বরের কাছে আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। কিন্তু দিঘায় তাঁর আগে থেকেই ফুলে ফেঁপে ওঠে জলস্তর।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় মঙ্গলবার সারারাত নবান্নেই ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাতভর কন্ট্রোলরুম থেকে নজর রেখেছেন পরিস্থিতির উপর। বুধবার সকালেও একাধিকবার সাংবাদিক বৈঠক করে পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন রাজ্যবাসীকে। যশের ল্যান্ডফল শেষ হতেই নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করলেন তিনি। জানিয়েছেন, “১৫লক্ষ ৪ হাজার ৫০৬ জনকে সরানো হয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রায় এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ৩ লক্ষ বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। ১৩৪টি বাঁধ ভেঙেছে। নোনা জলের কারণে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাছেরও ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে ১০ লক্ষ ত্রিপল পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। ১০ কোটি চাল ও শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ত্রাণ শিবিরে ওঠার পরও ১ ব্যক্তি মাছের জন্য জাল ফেলতে গিয়েছিলেন। জলে ডুবে গিয়েছেন তিনি। সন্দেশখালি, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, বাসন্তী, ক্যানিং ১ ও ২ নম্বর ব্লক, বজবজ, দিঘা, শংকরপুর, তাজপুর, রামনগর, কাঁথি, নন্দীগ্রাম, সুতাহাটা, দেশপ্রাণ, কোলাঘাট, শ্যামপুর, এদিকে কালীঘাট, চেতলা, রাসবিহারী-সহ গঙ্গার সামনের বহু এলাকা জলে প্লাবিত হয়েছে।