কবরস্থান তৈরী করতে জমি দান এক হিন্দু ব্রাহ্মণের কে যেন জাত খোঁজে,ধর্মের নামে রাজনীতি করে ?

Spread the love

ওয়েব ডেস্ক :- কে যেন  জাত খোঁজে,ধর্মের  নামে রাজনীতির করে ।  সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’, ক্লিশে সেই শব্দটা অভিধান থেকে বেরিয়ে সজীব হয়ে গেল। দেশের নানা কোণে যখন ধর্ম-বর্গে অসহিষ্ণুতার নমুনা বারবার শিরোনাম তখনই মুসলিমদের কবরস্থানের জন্য জমি দান করলেন হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের সদস্য, পূর্ব বর্ধমানের পালিতের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কালীকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়। তাঁর এই কাজে গর্বিত গ্রামবাসীরা।

৮৮ বছর বয়সি প্রবীণ কালীকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি বর্ধমান এক ব্লকের তালিত গ্রামে। স্ত্রী গত হয়েছেন। চার ছেলের সংসারে থাকেন কালীকৃষ্ণবাবু। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছেন গ্রামের মুসলিম পরিবারের কেউ মারা গেলে শেষকৃত্যের জন্য যেতে হয় পাশের গ্রামে। পরবর্তী সময়ে গ্রামেই যাতে সেই কাজ সম্পন্ন করা যায় তা নিশ্চিত করতে জমি দানের মনস্থির করেছিলেন কালীকৃষ্ণ বাবু। সেইমতো গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের বাসিন্দাদের কবরস্থান তৈরি করতে জমি দান করেছেন তিনি।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার বাসিন্দা কালীকৃষ্ণ বাবুর সাধ পুকুরের পাশে বেশ কিছুটা জমি রয়েছে। সেই জমি থেকেই কবরস্থান তৈরির জন্য জমি দান করেছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমকে কালীকৃষ্ণ বাবু জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই সংখ্যালঘু বাসিন্দাদের সৎকারের কষ্ট দেখে আসছিলাম। বিশেষত বর্ষাকালে খুবই কষ্ট হয়।তাই মনে মনে কবরস্থান তৈরির জন্য জমি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তা বাস্তবায়িত করতে পেরে ভাল লাগছে। ইতিমধ্যেই সেই জমি সরকারি নথিতে কবরস্থান বলে চিহ্নিত হয়েছে। কবরস্থান সংলগ্ন এলাকায় নমাজ পড়ার ব্যবস্থা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নমাজ পড়ার জায়গা সুন্দর করে বাঁধানো হয়েছে।

গ্রামবাসীরা বলছেন, এর আগেও রাস্তা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জমি দান করেছিলেন কালীকৃষ্ণ বাবু। গ্রামের সংখ্যালঘু বাসিন্দারা বলছেন, সৎকার করতে খুবই অসুবিধার মধ্যে পড়তে হতো। কালীকৃষ্ণবাবু যে উপকার করলেন তা চিরকাল মনে রাখবেন এই গ্রামের বাসিন্দারা। এই গ্রামে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যে কোনো ভেদাভেদ নাই তা কালীকৃষ্ণবাবুর এই কাজেই স্পষ্ট। এই গ্রামে হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে থাকেন। এর মাধ্যমে হিন্দু মুসলিমের এই সম্প্রীতি আরও মজবুত হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.