নিউজ ডেস্ক, কৃষ্ণনগর:- অসমে এনআরসি লাগু হওয়ার পর প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ গিয়েছে চূড়ান্ত নাগরিকত্বের তালিকা থেকে। তার মধ্যে অর্দ্ধেকের বেশী মানুষ হিন্দু। স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। বাংলাতে এখনও পর্যন্ত এনআরসি লাগু না হলেও এবার বিজেপিরই এক পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে উঠল ভিন দেশী নাগরিক হওয়ার অভিযোগ। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট দাখিল করে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করার অভিযোগও উঠেছে। ঘটনাটির জেরে বেশ শোরগোল পড়েছে নদিয়া জেলার রাজনীতিতে। কারণ শুধু গেরুয়া শিবিরই নয়, বিতর্কের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও। ঘটনাটি ঘটেছে রানাঘাট-২ ব্লকের রঘুনাথপুর হিজুলি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এই বিষয়ে রানাঘাট মহকুমা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিজুলি-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় নারায়ণপাড়া এলাকা থেকে বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন সবিতা বিশ্বাস। এখন তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে ভুয়ো কাস্ট সার্টিফিকেট দিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। একই সঙ্গে সবিতা দেবীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, তিনি ভারতের নন বাংলাদেশের নাগরিক। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে হিজুলি নারায়ণপাড়া এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন সবিতা বিশ্বাস। কিন্তু পরে তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, ভোটে প্রার্থী হতে সবিতা স্কুল সার্টিফিকেট জাল করেছেন এবং অন্য একজনকে নিজের বাবা সাজিয়ে জাতিগত শংসাপত্র হাসিল করেছেন। স্থানীয় মানুষের আরও অভিযোগ, সবিতা আদৌ এদেশের নাগরিক নন, তিনি একজন বাংলাদেশী নাগরিক। আর এর পরই গত মার্চ মাসে রানাঘাটের মহকুমা শাসকের কাছে বিষয়টির পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে অভিযোগ জানায় নারায়ণপাড়ার স্থানীয় মানুষজন।
যদিও এবিষয়ে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সবিতা দেবী। তার দাবি, তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে তাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল যোগদান করার জেরেই বিজেপি থেকে তার বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
এদিকে বিষয়টি থেকে নিজেদের দায় এড়িয়ে গেছেন হিজুলি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তথা এলাকার তৃণমূল নেতা নির্মল কর্মকার। উল্টে বিষয়টা নিয়ে তিনি বিজেপির দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন। তার দাবি, সবিতা বিজেপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, পরে তৃণমূলে যোগ দেন। তাই বিজেপিই বলতে পারবে, তিনি কি করেছেন। অন্যদিকে পঞ্চায়েত সদস্যার বিরুদ্ধে জাল শংসাপত্র বার করা ও বাংলাদেশি নাগরিকত্বের যে অভিযোগ উঠেছে তার যথাযথ তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন রানাঘাটের মহকুমা শাসক হরসিমরান সিং। সৌজন্য :- মহানগর ওয়েব পোর্টাল