নিউজ ডেস্ক :- করোনা ভাইরাস অনেক কিছু কেড়ে নিচ্ছে ।জীবন জীবিকা এক কঠিন বাস্তবের সামনে । জীবনের পিছনের দিন গুলি যেন এক একটা জ্যান্ত স্মৃতি । এর আবহে এবার বন্ধ হতে চলেছে মুসলিমদর সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদের নামাজ । লকডাউনের চতুর্থ পর্বের কথা মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার মধ্যেই পড়বে ইদ (২৫ মে)। এই পরিস্থিতিতে রেড রোডে ইদের নমাজ স্থগিত করে দিল আয়োজক খিলাফত কমিটি। এ বার মসজিদ বা মাঠে-ময়দানে ইদের নমাজ স্থগিত রাখার জন্য রাজ্যের ৪০ হাজারের বেশি মসজিদের কাছে নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে ওয়াকফ বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে।
খিলাফত কমিটির কলকাতা শাখার সম্পাদক সৈয়দ মহম্মদ সঈদ বুধবার বলেন, ‘‘রেড জ়োনের আওতায় থাকা কলকাতায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। তাই পারস্পরিক দূরত্বের বিধি না-মেনে রেড রোডে লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে ইদের নমাজ পড়াটা বড় ঝুঁকি হয়ে যাবে। তাই তা স্থগিত রাখা হচ্ছে।’’ মুসলিমদের উদ্দেশে তাঁর আবেদন, ‘‘আপনারা দীর্ঘ এক মাস কষ্ট করে মসজিদে না-গিয়ে বাড়িতে নমাজ পড়ছেন। ইদের নমাজটাও একটু কষ্ট করে নিজের নিজের বাড়িতে সপরিবার পড়ুন।’’
একই পথে হাঁটছে নাখোদা মসজিদ এবং ধর্মতলা ও টালিগঞ্জের টিপু সুলতান মসজিদ। রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আব্দুল গনি বলেন, ‘‘আগামী কয়েক মাস বড় চ্যালেঞ্জ। করোনা থেকে বাঁচতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাটা ভীষণ জরুরি। তাই ইদে মসজিদ বা ময়দানে জমায়েত না-করে বাড়িতে নমাজ পড়ার জন্য ওয়াকফ বোর্ডের তরফে রাজ্যের প্রায় ৪০ হাজার মসজিদে নোটিস পাঠানো হচ্ছে।’’
ফি-বছর ইদের দিনে রেড রোডে অন্তত চার লক্ষ মানুষ নমাজ পড়েন। কিন্তু এ বার সেখানে নমাজ হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী। তিনি বলেন, ‘‘লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হলে করোনা ভয়াবহ আকার নেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।’’ নাখোদা মসজিদে এবং সংলগ্ন রাস্তা মিলিয়ে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ ইদের নমাজ পড়েন। ওই মসজিদের ট্রাস্টি নাসের ইব্রাহিম বলেন, ‘‘বড়বাজার এলাকা কলকাতার সর্বাধিক বিপজ্জনক জায়গা। এই তল্লাটের নাখোদা মসজিদে ইদে বিপুল সংখ্যক মানুষের জমায়েত করাটা বড় ঝুঁকি হয়ে যাবে। তাই এ বার মসজিদে ইদের জমায়েত হবে না।’’
তাঁরও আর্জি, দেশ বাঁচাতে হলে সকলেই যেন বাড়িতে ইদের নমাজ পড়েন। একই আবেদন জানিয়ে ধর্মতলা ও টালিগঞ্জের টিপু সুলতান মসজিদের কো-ট্রাস্টি তথা টিপু সুলতান পরিবারের সদস্য শাহিদ আলম বলেন, ‘‘ইদে এই দুই মসজিদে মিলিয়ে অন্তত ১০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। করোনা এড়াতে এ বার তা হতে দেওয়া যাবে না।’’ একই সুরে বাড়িতে ইদের নমাজ পড়ার আবেদন জানিয়েছেন সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ কামরুজ্জামান।
সৌজন্যে: আনন্দবাজার পত্রিকা