বিভিন্ন অঞ্চলে না খেতে পাওয়া মানুষের ভিড় . ত্রাণ পেতে কাতারে কাতারে মানুষের লাইন, ত্রাণ বিতরণ বেহালার ১২১ নম্বর ওয়ার্ডে
পরিমল কর্মকার, কলকাতা : লকডাউন যত বাড়ছে চারিদিকে দুর্ভিক্ষের চিত্রটা ক্রমশঃ স্পষ্ট হচ্ছে। কোনও সংগঠনের ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী থাকলেই সেখানে কাতারে কাতারে মানুষ ভিড় করছেন। মানুষ ক্ষুধা নিবারণের জন্য মাঠে, ঘাটে, রাস্তায় অন্ন সংগ্রহের তাগিদে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন। কে কার আগে খাবার সংগ্রহ করতে পারবেন তা নিয়েও লাইনে দাঁড়ানো মানুষের মধ্যে কোনও কোনও জায়গায় চলছে বাকবিতণ্ডা ও বচসা। এই করুন দৃশ্য আর কতদিন দেখতে হবে সেটাই এখন মানুষের কাছে অজানা।
এই পরিস্থিতিতে ৫ মে মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতা জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি অর্নব বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ও গণেশ ঘোষের পরিচালনায় ১২১ নম্বর ওয়ার্ডে রান্না করা খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এদিন অন্ন সংগ্রহের জন্য আনন্দপল্লী ক্লাবের সন্নিকটে বহু মানুষের সমাগম হয। ডিম, ভাত সংগ্রহের পরই তাদের চোখে মুখে ছিল একটা পরিতৃপ্তির ছাপ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক “খাবার হাতে এক মহিলা বললেন, তার স্বামী রিক্সা চালায়। কিন্তু বন্ধের জন্য রিক্সা নিয়ে বেরোতে পারছেনা। বাড়িতে দুটো বাচ্চা রয়েছে। তার মধ্যে একটা বাচ্চা অসুস্থ, ওষুধ আনতে পারছি না। গত মাসে ঘর ভাড়াও দিতে পারিনি। হাতে টাকা পয়সা কিছুই নেই। কি করে যে চলবে জানিনা।” শুধু এই রিক্সা চালকের পরিবারই নয়, এরকম কত শত পরিবারই রয়েছে। তাদের খবর কেই বা রাখছে ? সব তো আর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ হয় না। বহু মানুষের মনেই এখন প্রশ্ন চিহ্ন, দুর্ভিক্ষ কি আগত?
সমাজকর্মী অজয় পাল জানান, এদিন ৪০০ জন গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যদের ডিম, ভাত পরিবেশন করা হয়েছে। লকডাউন চলাকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী চলতে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এদিন এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সোমনাথ ব্যানার্জী, চন্দন ঘোষ, অমিত মান্না, বুবাই চক্রবর্তী, রাজু মাঝি, বিশ্বনাথ ব্যানার্জী, গণেশ দ্বিবেদি, গৌরব শিকার, প্রলয় রায় প্রমুখ।