গুনে গুনে ঠিক চারদিন, মমতার ঘোষণা মতোই ১৪৪৪ কোটি পৌঁছল ৩০ লক্ষ অ্যাকাউন্টে
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়:- গুনে গুনে চারদিন। ২৯ মে ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে এক লক্ষ মানুষের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছানোর হিসাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ঠিক তার চারদিনের মাথায় টুইট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পাঁচ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে গিয়েছে তাঁদের বাড়ি সরানোর টাকা। ২৩ লক্ষ কৃষক পেয়ে গিয়েছেন তাঁদের শস্যের ক্ষতিপূরণের অর্থ। দুই লক্ষ পান চাষির হাতেও পৌঁছেছে তাঁদের ক্ষতিপূরণ। সব মিলিয়ে টাকার অঙ্কে হিসাবটা ১৪৪৪ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “প্রাথমিকভাবে ক্ষতিপূরণের ১৩৫০ কোটি টাকা ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ক্ষতিপূরণের জন্য এখনও পর্যন্ত ১৪৪৪ কোটি টাকা ছেড়েছে সরকার।”
করোনা থেকে আমফান ঝড়। পরপর বিপর্যয়। কোনওরকম আয় ছাড়াই তা সামলাতে হচ্ছে বলে বারবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কোনওভাবেই কোনও কিছুর সঙ্গে আপস করেননি। লকডাউনে দেশের অর্থনীতির ধাক্কা সামলাতে ও পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা ভেবে একাধিক প্রকল্প ও অনুদান ঘোষণা হয়। কিন্তু সেসব কোনওভাবেই গরিব মানুষের পকেটে পৌঁছবে না বলে সমালোচনা শুরু হয় দেশজুড়ে। তার মধ্যেই ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠিয়ে মমতা বুঝিয়ে দেন আসল মানবদরদী তিনিই। কথা দিলে তা রাখেন। সরকারি অনুদান ঘোষণার চারদিনের মধ্যে কত টাকা কাদের কাছে পৌঁছল তার হিসাব তাই সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সন্ধ্যা গড়াতেই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে আরও একবার নিজের উদ্বেগের কথা বলে পরপর টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “করোনা মোকাবিলায় যখন আমরা লড়ে যাচ্ছি, তখনই আমফান ঝড় আমাদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়ে গেল। ভাঙ্গা বাড়ি, ধসে পড়া কৃষি, মৎস্যচাষ আমাদের অনভিপ্রেত ক্ষতির মুখে দাঁড় করিয়ে গেল।” যদিও এর পরেও তিনি যে হেরে যাবেন না, হাল ছেড়ে দেবেন না, আরও একটা টুইট বলে দিয়েছেন সে কথা। বলেছেন, “এর পরেও সব ক্ষতিপূরণে বাংলার মানুষ সরকারি সহযোগিতায় মাথা তুলে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর। দ্রুত সেই কাজ শুরু হয়েছে।” প্রত্যয়ের সঙ্গে তাই তাঁর ঘোষণা, “আমরা দ্রুত শুরু করেছি। একটা কিকস্টার্ট হয়েছে। পুনর্গঠনের কাজে আমরা প্রথম দফায় অবিলম্বে ৬২৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।”
যদিও এর পরও ত্রাণ বিলি থেকে শুরু করে পরিযায়ী ইস্যু, ঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলা— সব নিয়েই বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হচ্ছে সরকারকে। সঙ্গে নানা অভিযোগে নাম জড়াচ্ছে দলীয় কর্মীদের। এই পর্বে দলনেত্রী হিসাবে আগামী ৫ জুন বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে বসার কথা মমতার। বিরোধীদের জবাব কোন পথে দিতে হবে, মনে করা হচ্ছে সেই তাই সেদিন বাতলে দেবেন তিনি! ভাষণ নয় বাস্তবে করে চাই । ঠিক বাস্তবেই সেই কাজ করে দেখালেন মাননীয়া মমতা ব্যার্নাজী।
সৌজন্য:- সংবাদ প্রতিদিন