জওয়ানের নাম মুসলিম দেখেই বাড়ি পুড়িয়ে দিল দাঙ্গাবাজরা

Spread the love

ওয়েব ডেস্ক:- দিল্লীতে সংঘর্ষের ভয়াবহতা ক্রমশ সামনে আসছে। দিল্লীর সংঘর্ষে যে কয়েক হাজার মুসলিম পরিবারকে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন মহম্মদ আনিস। তাদের পরিবারও আশা করেছিল, বাড়ির বাইরে থাকা নেমপ্লেট হয়তো দাঙ্গাবাজদের রুখে দেবে। কেননা বাড়ির বাইরে মহম্মদ আনিসের নামের পাশে ‘বিএসএফ’ কথাটিও লেখা ছিল। কিন্তু ২৫ জানুয়ারি যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লির খাস খাজুরি গলিতে উন্মত্ত জনতা ঢুকেছিল, তখন সেই আগুন থেকে কোনও বাড়িই রক্ষা পায়নি। এমনকি ‘বিএসএফ’ লেখা বা তাঁর পদকের চিহ্নও বাঁচাতে পারল না ওই জওয়ানের বাড়িকে।
প্রথমে বাড়ির বাইরে থাকা গাড়িতে আগুন লাগানো হয়। এর পরের কয়েক মিনিট সেনা কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে ছোড়া হতে থাকে পাথর। সঙ্গে চলে চিৎকার। ‘এদিকে আয় পাকিস্তানি, তোকে নাগরিকত্ব দিচ্ছি।’ এরপর গ্যাস সিলিন্ডার ছুড়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে ভারতীয় ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে বিএসএফ-এ যোগ দেন আনিস। তারপর লাগাতার তিন বছর জম্মু কাশ্মীরে সীমান্ত পাহারা দেন। কিন্তু সে সব কিছুই দাঙ্গাবাজদের জন্য মতলব রাখেনি। উন্মত্ত জনতার সামনে অসহায় হয়ে পড়ে আনিস। বিএসএফ জওয়ান বাদেও বাড়িতে আনিসের বাবা, কাকা এবং ১৮ বছরের বোন ছিল। ঝড় উঠতে চলেছে বুঝতে পেরে আগেভাগেই ঘর ছেড়েছিলেন তারা। তাদের উদ্ধার করে আধাসেনা।

যেখানে তিনদিন আগেও সুখের সংসার ছিল সেখানে এখন কেবল পড়ে আসবাবপত্রের ছাই। খাজুরি খাস লেনে আনিসের বাড়ির পাশাপাশি পরপর ৩৫টি বাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। মাত্র একটি মুসলিম বাড়ি বাদ রাখা হয়েছিল। বাড়ির জিনিসপত্র সব শেষ হয়ে গেলেও প্রাণে বেঁচে থাকাই এখন আনিসের পরিবারের সবথেকে বড় প্রাপ্তি। আগামী তিন মাসে দু’টি বিয়ে হওয়ার কথা তাদের পরিবারে। এপ্রিল প্রথমে তাঁর বোন নেহা পারভিনের বিয়ে। এরপর আনিস নিজেও বিয়ে করবেন।

বিয়ের জন্য সারাজীবনের সঞ্চিত অর্থ সংগ্রহ করে আনিসের পরিবার যা যা নেকলেস-গয়না কিনেছিল, পুরোটাই আগুনে জ্বলে ছাই হয়ে গিয়েছে। বিয়ের খরচের জন্য যে ৩ লাখ টাকা জমিয়ে রাখা ছিল, তাও এখন ভস্মে পরিণত। খাজুরি খাস সবসময়ই হিন্দু প্রধান এলাকা বলে পরিচিত ছিল। আনিসের পরিবারের দাবি, কোনও প্রতিবেশী এই হামলা চালায়নি। বহিরাগতরাই এসে হামলা চালিয়েছিল। সেই সময় হিন্দু প্রতিবেশীরাই রুখে দাঁড়ায়। দাঙ্গাবাজদের ফিরে যেতে বলে তারা।

সৌজন্য:- Mahanagar desk

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.