ওয়েবডেস্ক: আম আদমির হেঁসেলে আগুন। পেঁয়াজ কাটতে গিয়ে নয়, কিনতে গিয়েই নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা নাগরিকদের। শহর কলকাতায় গতকালও পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে। অস্বাভাবিক এই মূল্যবৃদ্ধির পায়ে বেড়ি পরাবে সরকার, এমনটা ভেবেই আশা করে বসেছিলেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু, সবাইকে কার্যত চমকে দিলেন খোদ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। তিনি যে জনগণের এই সমস্যা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত নন, তা অকপটে জানিয়ে দিলেন গণতন্ত্রের মন্দির সংসদে। যা শোনার পর ক্ষোভে রীতিমতো ফুটছে জনতা। প্রশ্ন, একজন দেশের অর্থমন্ত্রী কীভাবে এই ধরনের বয়ান দিতে পারেন?
কথায় আছে, ‘আপ রুচি খানা, পর রুচি পড়না।’ অর্থাৎ খাবার রুচি হোক নিজের মতো, আর পোশাকের রুচি হোক অন্যের মতো। সীতারমন সম্ভবত এই প্রবাদবাক্য জীবনেও শোনেননি। তা না হলে নিজের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ভেবে দেশের নাগরিকদের সম্পর্কে উদাসীন থাকতে পারতেন না তিনি। ঘটনা হচ্ছে, সাধারণ জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি, বিশেষ করে পেঁয়াজের এভারেস্ট ছোঁয়া দাম নিয়ে শেষ কয়েকদিন উত্তপ্ত থেকে সংসদ। কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী বারবার সওয়াল করেছেন, কেন এমনটা হচ্ছে? সরকার কেন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না? এই বিষয়ে বুধবার জবাব দিতে ওঠেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আর জবাবে তিনি যা বলেন, তাতে দেশবাসী ‘অবাক’, ‘স্তম্ভিত’, ‘আশ্চর্য’ হয়েছেন, আকাশ থেকে পড়েছেন।
সংসদে দাঁড়িয়ে নির্মলা বলেন, যেহেতু তিনি এমন একটা পরিবারের অংশ যেখানে পেঁয়াজ খাওয়া হয় না, তাই তিনি পেঁয়াজের দাম নিয়েও ভাবিত নন। অর্থমন্ত্রীর এই মন্তব্য নিজের কান হয়তো বিশ্বাস করবে তিনি। কিন্তু তিনি বলেন, ‘চিন্তা করবেন না, আমি এমন একটা পরিবার থেকে এসেছি যেখানে পেঁয়াজ বা রসুন খাওয়া হয় না। তাই এটা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই।’ তাঁর মন্তব্যকে সমর্থন করে পাশ থেকে আবার বিজেপি সাংসদরা বলে ওঠেন, ‘বেশি পেঁয়াজ খেলে মানুষ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে।’ কেউ আবার বলেন, ‘এমনিও পেঁয়াজ খেলে ক্যানসার হয়ে যায়।’
কেন্দ্রের প্রতিনিধিদের এমন বয়ান শুনে তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় দশা বিরোধী শিবিরের। তারা হাসবেন না কাঁদবেন বুঝতে পারছেন না। কেউ কেউ তো রাগের চোটে বলে ওঠেন, ‘এদের সঙ্গে আলোচনা বা বিতর্কে যাওয়াটাই বেকার। স্রেফ সময় নষ্ট।’