অয়ন বাংলা , ওয়েবডেস্ক:- এই ফ্যাসানের যুগে যে কোন সাধারণ জনপ্রতিনিধি প্রধান থেকে সভাপতি,সভাধিপতি ,বিধায়ক মন্ত্রীর লম্বা গাড়ির লাইন চোখে পড়ে ।কিন্তু বাম আমলের বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমান ,সেই মুর্শিদাবাদ থেকে আসেন সরকারি বাসে আবার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস বিধায়ক আব্দুল মান্নান এবং আরোও এক কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র র ও ভরসা সরকারি পরিবহন । ও সরকারী নিয়মে পঞ্চায়েত প্রধানদের মাইনে ৪ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ ওই টাকাতেই আকছার দেখা যায় দামি এসইউভি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিশাল বপু পঞ্চায়েত প্রধান। আর বিধায়ক হলে, ফ্যাশনটা বেড়ে যায় আরও একটু বেশি। যার প্রতিফলনটা চোখে পড়ে রাজ্যের বিধানসভা ভবনে। দামি গাড়ির রীতিমতো লাইন লেগে থাকে সেখানে। কখনও বা দামি গাড়ি মাত্রা ছুঁয়ে ফেলে অডি বা বিএমডব্লুতেও। তবে এত কম মাইনে পেয়েও কোথা থেকে এত দামি গাড়ি কেনার অর্থ পান জনপ্রতিনিধিরা তার হিসাব মেলা ভার। আর এরই মাঝে হয়ত কিছুটা ব্যাতিক্রমী রাজ্যের প্রাক্তন পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা বাম বিধায়ক আনিসুর রহমানের।
বাড়ি ডোমকল। আর সেখান থেকেই প্রত্যেকদিন সরকারী বাসে ডোমকল থেকে কলকাতা আসেন বিধায়ক আনিসুর রহমান। শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষা আনিসুরের ভরসা চেনা সেই সরকারী বাস। বিধানসভার অধিবেশন শেষে ফের ওই একই বাস ধরে ফিরে যান নিজের বাড়ি। আর এই তথ্যই সামনে এল রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারিকের মন্তব্যে, বিধানসভায় একটি সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন উত্তরপর্বে। কাটমানি নিয়ে যখন গোটা রাজ্য উত্তাল সেখানে এমন এক তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পর ব্যাতিক্রমী ওই বিধায়ককে স্যালুট জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
গত মঙ্গলবার বিধানসভা ভবনে আনিসুর বাবু রাজ্যসরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, ‘সেই যুক্তফ্রন্ট আমল থেকে কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের আমল হয়ে তৃণমূল জমানাতেও ডোমকল থেকে কলকাতাগামী এই বাস চলত। কিন্তু তা অনেকদিন বন্ধ। আগেও মন্ত্রীকে বলা হয়েছিল, কিন্তু চালু হয়নি।’ আনিসুর বাবুর এই বক্তব্যকে খণ্ডন করে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, প্রাক্তন মন্ত্রী অর্ধসত্য কথা বলছেন। ওই রুটে দুটি নতুন বাস বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু থাকার তা চালু করা যায়নি। তবে শীঘ্রই তা চালু হবে।’ এরপরই শুভেন্দুবাবু বলেন, আসলে উনি ৬ ঘন্টা ওই সরকারী বাসে সওয়ার হয়ে কলকাতাতে আসেন। কয়েকদিন তা বন্ধ থাকার জন্য সমস্যায় পড়েছেন।
উল্লেখ্য, নেতা মন্ত্রীদের অর্থনৈতিক বাড়বাড়ন্তের ভিড়ে আজও কিছুটা ব্যাতিক্রমী রাজ্যের কিছু বিধায়ক। যে তালিকায় প্রাক্তন মন্ত্রী আনিসুর রহমানের পাশাপাশি রয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। জানা গিয়েছে, প্রায়শই শেওড়াফুলি থেকে লোকাল ট্রেনে হাওড়া স্টেশনে এসে লঞ্চে গঙ্গা পেরিয়ে বিধানসভায় আসেন ওই বিধায়ক। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত গাড়ি বিহীন প্রবীণ কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের বিধানসভা আসতে আজও ভরসা বাস। আমতা থেকে বাস ধরে কলকাতা আসেন তিনি। সেখান থেকে হেঁটে আসেন বিধানসভা। কাটমানি জামানায় জনগণের টাকার মোচ্ছবের ভিড়েও আজও আলাদা ভাবে চোখে পড়ে হাতে গোনা এমনই কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে। সত্যিই এই কাটমানির যুগে এমনও বিধায়ক ও চোখে পড়ে ।তাই সাধারণ মানুষ এদের কে স্যালুট জানাই ।