ওয়েবডেস্ক:- গোটা দেশে আজ চলছে বিভাজনের নোংরা খেলা জঘণ্য রাজনীতি। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রতিবাদ জারি রয়েছে উত্তরপ্রদেশে। সরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত হয়েছে ১৯ জনের। এই পরিস্থিতিতে এক বরিষ্ট পুলিশ আধিকারিকের বিতর্কিত মন্তব্যের ভিডিও সামনে এসেছে। যেখানে ওই আধিকারিককে প্রতিবাদীদের উদ্দেশে বলতে শোনা যাচ্ছে পাকিস্তানে চলে যাও। এক জাতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধির মোবাইল ফোনে ক্যাপচার হযেছে পুরো ভিডিওটি। বিক্ষোভকারীদের হিংসা না ছড়ানো ও আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আর্জি জানিয়ে পুলিশ আধিকারিকরা আলোচনাও করছেন প্রতিবাদীদের সঙ্গে। উত্তরপ্রদেশের অন্যতম উত্তপ্ত এলাকা মেরঠের পুলিশ সুপার অখিলেশ নারায়ণ সিং মুসলিম জনবহুল এলাকায় গিয়ে কথা বলছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। সেইসময়ই তাঁকে বলতে শোনা যায় পাকিস্তানে চলে যাওয়ার কথা।
শুক্রবারের নমাজ শেষ হওয়ার পরই মেরঠের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন প্রতিবাদীরা। অখিলেশ সিং ও তাঁর সহকর্মীদের দেখা যায় একটি সরু গলি দিয়ে যেতে। সেখানেই বেশ কয়েকজন এলাকাবাসীকে মাথায় চুপি পড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তাঁরাই ও পুলিশ আদিকারিককে প্রশ্ন করেন কোথায় যাচ্ছেন? সিং বলেন, এই গলিটাকে সাফ করতে যাচ্ছি। জবাবে এলাকাবাসীরা বলেন, আমরা আমাদের নমাজ পাঠ করছি। সিং বলেন, সেসব ঠিক আছে। তবে ওই কালো আর নীল ব্যাজ পরে যারা আন্দোলন করছে তাদের বলে দিও পাকিস্তানে চলে যেতে। থাকবে এখানে, খাবে এখানে, আর গুণগানই গাইবে অন্যকোনও জায়গার এটা হবে না। সাংবাদিকের মোবাইলে ক্যাপচার হয়েছে পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য।
শুধুই এতে ক্ষান্ত থাকেননি সিং, তিনি আরও হুংশিয়ারি দেন আমি প্রত্যেকটা বাড়ির এক একটা পুরুষকে জেলে ভরে দেব। সবাইকে শেষ করে দেব। তবে এটা বোঝা যায়নি কেন ওই আধিকারিক এসব কথা বলতে গেলেন। এক সর্বভারতীয় দৈনককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশ অফিসার জানিযেছেন, তাঁদের কাছে খবর ছিল সমাজ বিরোধীরা ওই এলাকায় পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাই দেখতে এসেছিলাম কারা এমন করছে।
শুধুই এতে ক্ষান্ত থাকেননি সিং, তিনি আরও হুংশিয়ারি দেন আমি প্রত্যেকটা বাড়ির এক একটা পুরুষকে জেলে ভরে দেব। সবাইকে শেষ করে দেব। তবে এটা বোঝা যায়নি কেন ওই আধিকারিক এসব কথা বলতে গেলেন। এক সর্বভারতীয় দৈনককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুলিশ অফিসার জানিযেছেন, তাঁদের কাছে খবর ছিল সমাজ বিরোধীরা ওই এলাকায় পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দিচ্ছিলেন। তাই দেখতে এসেছিলাম কারা এমন করছে।
মেরঠ পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর ব্যপক ইটবৃষ্টি করে। হিংসা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে হিংসাত্মক আন্দোলনে মেরঠে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মেরঠেই রাজ্যের সবথেকে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মেরঠ পুলিশের বক্তব্য পুলিশ একটিও গুলি চালায়নি। প্রতিবাদের মধ্যে গুলির বিনিময়েই মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের তরফে ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে মুখোশধারী প্রতিবাদীরা পুলিশের ওপর গুলি চালাচ্ছে।
তবে এই প্রথম নয় যে কোনও পুলিশ ধর্মীয় উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছে। উত্তরপ্রদেশে এই বিক্ষোভ আন্দোলন চলাকালীন কানপুরেও এক কনস্টেবলের মুখে সাম্প্রদায়িক ও অশ্লীল কথা শোনা যায়। বিক্ষোভরত মানুষের ওপর কনস্টেবলের বক্তব্য আমরা তোমাদের ভারতে থাকতে দেব না।
গতকালই উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীযোগী আদিত্যনাথ তাঁর পুলিশের সমর্থনে বলেন, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে আন্দোলনকারীরা শান্ত হয়েছে। রাজ্য পুলিশের কঠোর ব্যবস্থা পক্ষেই সওয়াল করেছেন যোগী। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ ইতিমধ্যেই ৪৯৮ জনকে চিহ্নিত করেছে যাদের কাছ থেকে সরকার ক্ষতিপূরণ চাইবে। এরমধ্যে ১৪৮ জনই মেরঠের।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশের অ-মুসিলম সংখ্যালঘুদের ভারতে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলছে। আর এই নিয়েই সরব বিরোধী সব দলগুলি। কেন ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব? প্রশ্ন বিরোধীদের। সরকারের জবাব এই তিন দেশের সংখ্যাগুরু মুসলমান সম্প্রদায়। আর এখানে যাঁরা ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার তাঁদেরই এদেশে নাগরিকত্ব দেবে ভারত সরকার। এদেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের কোনও ভয় নেই বলে আশ্বস্ত করলেও সিএএ-র প্রতিবাদে কার্যত রণক্ষেত্র দেশের বিভিন্ন এলাকা। উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। মেরঠের পুলিশ সুপারের মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে।
সৌজন্য:- Mahanagar desk