ফের খবরের শিরোনামে বিস্ফোরক শোভন বৈশাখী

Spread the love

অয়ন বাংলা,নিউজ ডেস্ক, কলকাতা:- ফের খবরের শিরোনামে শোভন-বৈশাখী। এবার সাম্প্রদায়িক তকমা দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগের তির খোদ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই। বুধবার দুপুরে বন্ধু শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গোলপার্কের বাড়িতে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই চক্রান্তের নেপথ্যে থাকার জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন খোদ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। শিক্ষামন্ত্রীকে তিনি অন্ধ বিশ্বাস করলেও বর্তমানে তাঁর নির্দেশেই বৈশাখীর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। যে প্রসঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই কাছের বান্ধবীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর অ-সময়ের বন্ধু রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। বান্ধবী বৈশাখীকে পাশে নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একহাত নেন তিনিও।

বুধবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে আল আমিন কলেজের শিক্ষিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁর কলেজের একজন শিক্ষিকা তার বিরুদ্ধে অনবরত নানান কুত্সা রটাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ করে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে। বৈশাখীর সম্মানহানির উদ্দেশ্যেই এই পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এদিন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গত পঁচিশে এপ্রিল ঘটনাটি তাঁর প্রথম নজরে আসে, ঘটনাক্রমে যেদিন তাঁর জন্মদিন ছিল। তার পর থেকেই সোশ্যাল সাইটে বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ করে একাধিক ভিডিও পোস্ট করেন ওই শিক্ষিকা। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এক অডিও ভিজুয়াল প্রেজেন্টেশনে সেই ভিডিওগুলো পেশ করেন শোভন-বৈশাখী। যেখানে ওই শিক্ষিকাকে বৈশাখীর বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায়। ভিডিও গুলিতে ওই শিক্ষিকাকে বলতে শোনা যায়, দিনের পর দিন কলেজে আসেন না টিচার ইনচার্জ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মক্ষেত্রে অন্যান্য সহকর্মী শিক্ষক শিক্ষিকাদের হেনস্থা করেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এ ছাড়াও বৈশাখীর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ করেন তাঁর ভিডিও বার্তায়। এর পরেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন শোভন বান্ধবী বৈশাখী। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়েই বৈশাখী মন্তব্য করেন, গত ২৩শে জুলাই শোভনের গোলপার্কের বাড়িতে দেখা করতে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেখানেই শোভনকে দলের কাজে পুনরায় ফিরে আসতে অনুরোধ করেন পার্থ। ওই বৈঠকেই উঠেছিল বৈশাখীকে হেনস্থার প্রসঙ্গও। তিনি জানান এই প্রশ্নের প্রত্যুত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, “বৈশাখীর দায়িত্ব আমার, আমার উপর আস্থা রাখ, কিছু হবে না ওর।”

যদিও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সমস্ত প্রস্তাবে শোভন রাজি না হতেই পরিস্থিতি হিতে বিপরীত হয় বলে সন্দেহ শোভন বৈশাখীর। তিনি দলের মহাসচিবের ডাকে সাড়া দিয়ে দলের মূল স্রোতে না ফেরায় বৈশাখীর উপর কোপ নেমে এসেছে বলে দাবি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যে শিক্ষিকা বৈশাখীর বিরুদ্ধে একের পর এক ভিডিও বার্তা পোস্ট করেছিলেন, তার নেপথ্যেও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর ইন্ধন রয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন বৈশাখ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, তাঁর বিরুদ্ধে হতে চলা চক্রান্তের ব্যাপারে যখন তিনি জানতে পেরেছিলেন, তার পর থেকে একাধিকবার রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। যদিও উচ্চশিক্ষা দফতর আজ পর্যন্ত একবারের জন্যও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করেনি বলে অভিযোগ বৈশাখীর। গোটা বিষয়টির নেপথ্যে খোদ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে একাধিকবার আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলেন বৈশাখী। তিনি বলেন, “পার্থদাকে একসময় অন্ধের মতো বিশ্বাস করতাম, তাঁকে অভিভাবকের মতো সম্মান করতাম। ওনাকে খুব ভরসা করেছিলাম।” এর পরেই আর চোখের জল চেপে রাখতে পারেননি বৈশাখী। কেঁদে ফেলেন সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্যেই। বান্ধবীকে কাঁদতে দেখে যথেষ্ট অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। এর পর মাইক হাতে নিয়ে তিনিও শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন।
বান্ধবীর অভিযোগকে সমর্থন করে পাশে দাঁড়ান শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিস্ফোরক দাবি করেন, সে দিন পার্থর প্রস্তাবে রাজি হলে হয়তো বৈশাখীর উপর কোপ পড়ত না। এমনটাই মনে করেন শোভন ও বৈশাখী দুজনেই। এরপর এই লড়াইয়ে হার স্বীকার করে তাঁর চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন বৈশাখী। আগামীকালই আচার্য তথা রাজ্যপালের কাছে গিয়ে ইস্তফাপত্র পেশ করবেন বলে জানান বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এ বিষয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

সৌজন্য :-মহানগর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.