মা-বাবা কে হারিয়ে অসহায় ছোট্ট ভাইবোন ! বড়ুঞার আসমাতারা, মোজাম্মেলর জীবন কী ভেসে যাবে চোরাবালির স্রোতে!
জৈদুল সেখ, বড়ুঞা:-
জন্ম দিলেই মা-বাবা হওয়া যায়না আবার জন্ম গ্রহণ করলেও বাবা মার স্নেহ পাওয়া যায়না তার অমানবিক দৃষ্টান্ত বড়ুয়া থানার ফুটফুটে ফুলের মতো দুটি শিশু আসমাতারা এবং মোজাম্মেল।
জানা গেছে শিশুদের মা’কে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে জমি বাড়ি বিক্রি করে বাবা কালু বিদেশে চলে গেছে ! শুধু তাই নয় পিতা বিদেশে গিয়ে আরও একটি বিয়ে করেছে! গত দুবছর ধরে বাবা শিশুদের কোনো খোঁজ নেয় না। অসহায় শিশু দুটির একমাত্র শেষ সম্বল ছিল ঠাকুরমা কিন্তু আসমা জানায়
“আমার দাদি বলেছে, আমার বৌ বেটা নাই তা তোদের নিয়ে কী করব! ”
নির্বাক নিরহ শিশু দুটির চোখে কেবলই হতাশা, আশ্রয়হীন, মা হারা, বাবা হারা শিশু দুটির দুই বেলা খাবার আর নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় পথে পথে দিন কাটছে ছোট্ট আসমা এবং মোজাম্মেল ভাইবোনের!
উল্লেখ্য কেবলমাত্র তাদের বাবা মা, ছেড়ে চলে গেছে তাই নয় তাদের ভাগ্যের ভিটেমাটিও বিক্রি করে দিয়েছে। অসহায় ভাইবোন দুই বেলা খাবার আর নিরাপদ একটা আশ্রয়ের খোঁজে ভবঘুরে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে মানুষের দুয়ার দুয়ারে কেউ ভাইবোনের মুখের পান তাকিয়ে ভালোবাসার আঁচলে আদর করে দু মুঠো খাবার তুলে দিচ্ছে! কেউবা দুদিনের দায়িত্ব নিয়ে থাকতে দিচ্ছে। আবারও কেউ করোনার আতঙ্কে গ্রাম ছাড়া করছে! জানেনা তারা কোথায় রাত কিংবা দিন কাটবে কী খেয়ে বেঁচে থাকবে !
এভাবেই গতকাল রাত থেকেই এই বাচ্চা দুটি বড়ঞা থানার ফতেপুর গ্রামে এসে ওঠে, সারারাত ধরে গ্রামের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর পর সকাল হতেই গ্রামবাসীদের নজরে আসতে গ্রামের স্থানীয় এক মহিলা পারুল খাতুন ভাইবোনদের আশ্রয় দেন এবং খাওয়ার ব্যবস্থাও করেন। কিন্তু থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেও পারুলের অভিযোগ আমরা এই অসহায় ভাইবোন শিশু দুটি যাতে নিরাপদ স্থান থাকে তারজন্য পুলিশ প্রশাসনকে এই বিষয়ে একাধিকবার জানালেও বড়ুয়ার প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো হেলদোল বা ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
বোন আসমাতারা বলেন ” আমাদের কেউ নেই আমরা ইকটু ভালো যায়গায় থাকতে চাই পড়তে চাই! আমরা পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। আরো পড়তে চাই। ”
এখন দেখার বিষয় ফুলের মতো দুটি শিশুর জীবন চোরাবালির স্রোতে ভেসে যাবে নাকি প্রশাসন তাদের সুস্থ জীবন গড়ে তুলতে সাহায্য করব।