নিউজ ডেস্ক: – এবার গোমাংস খাওয়া যাবে না বাঘ সিংহ সহ বন্য প্রাণীদের .এই রকম নিদান দিল হিন্দুত্ব বাদীরা । কে কি খাবে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও একটা সমাধান দিয়েছিল যে সেটা তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার .কিন্তু এবার বাঘ সিংহ সহ বন্য প্রাণীরা কি খাবে সেটা ও ঠিক করে দিবে হিন্দুত্ব বাদীরা । এবার গোমাংস নিয়ে আন্দোলনের আঁচ পৌঁছল অসমের গুয়াহাটি চিড়িয়াখানাতেও। সেখানে থাকা মাংসাশী প্রাণীদের গরুর মাংস খেতে দেওয়া নিয়ে সরব হিন্দুত্ববাদী নেতা সত্যরঞ্জন বোরা । তাঁর নেতৃত্বে চিড়িয়াখানার সামনে বিক্ষোভও দেখান বেশ কয়েকজন। গোমাংস খেতে দেওয়া বন্ধ করার দাবিতে স্লোগানও দিতে থাকেন তাঁরা। পরে যদিও পুলিশের তৎপরতায় বিক্ষোভ সামাল দেয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
হিন্দুত্ববাদী নেতা সত্যরঞ্জন বোরা বলেন, “হিন্দু সমাজে আমরা গোমাতার সুরক্ষার দিকে বিশেষ নজর দিই। কিন্তু গুয়াহাটি চিড়িয়াখানায় মাংসাশী প্রাণীদের খাবার হিসাবে গোমাংস দেওয়া হচ্ছে। কেনও গোমাংস দেওয়া হচ্ছে? অন্যান্য ধরনের মাংসও তো দেওয়া যেতে পারে।” গোমাংসের পরিবর্তে অন্য কোন ধরনের খাবার চিড়িয়াখানার মাংসাশী প্রাণীদের দেওয়া যায়, সে সমাধানও বাতলে দিয়েছেন বোরা। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গুয়াহাটি চিড়িয়াখানায় প্রচুর সংখ্যক সম্বর হরিণ রয়েছে। জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য হয়ে পুরুষ সম্বর হরিণদের আলাদা রাখা হয়। তাই অনায়াসেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সম্বর হরিণ মাংসাশীদের খাবার হিসাবে দিতে পারে।”
এই ঘটনায় অত্যন্ত বিরক্ত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। অসমের বনদপ্তরের সচিব তেজস মরিস্বামী রীতিমতো অবাক। তিনি বলেন, “মাংস বহনকারী একটি গাড়িকে রাস্তায় আটকে দেন হিন্দুত্ববাদীরা। চিড়িয়াখানায় থাকা প্রাণীদের কী খাওয়ানো হবে তা স্থির করে কেন্দ্র। তাই আমাদের কিছুই করার নেই। আর সম্বর হরিণ হত্যা করে মাংসাশী প্রাণীদের খাবার হিসাবে পরিবেশন করা সম্পূর্ণ বেআইনি।” অসমের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লাবৈদ্যও হিন্দুত্ববাদীদের দাবির সম্পূর্ণ বিরোধিতা করেছেন। তাঁর দাবি, চিড়িয়াখানায় থাকা মাংসাশী প্রাণীদের সুষম পুষ্টির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন গোমাংস। অনেক চিড়িয়াখানায় মোষের মাংস দেওয়া হয়। তবে তা আমাদের কাছে নেই। তা কেন্দ্রের নির্দেশে গোমাংসই খাওয়ানো হয় প্রাণীদের।
গোমাংস নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। গোমাংস নিয়ে প্রতিবাদ করে বহুবারই শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছেন হিন্দুত্ববাদীরা। কখনও ব্যবসায়ীকে মারধর, বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে আকছার। তবে তার আঁচ যে গুয়াহাটি চিড়িয়াখানার মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্যতালিকাতেও পড়তে পারে, তা বোধহয় ভাবতে পারেননি অনেকেই।
সৌজন্য :- সংবাদ প্রতিদিন