কোচবিহারে বিজেপির ‘আইটি যোদ্ধা’, একাই চালান ১১১৪ টি হোয়্যাটস্যাপ গ্রুপ
ওয়েব ডেস্ক,অয়ন বাংলা:-রাষ্ট্রীয় অধ্যক্ষ অমিত শাহের উপস্থিতিতে ট্রেনিংপ্রাপ্ত, বছর ছত্রিশের দীপক দাস, একাই দুই হাতে সামলান নয় নয় করে এক হাজার একশ চোদ্দটি হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ। পার্টির ওপর তলার নির্দেশে ‘প্রয়োজনমত’ দিনতে রাত আর রাতকে দিন করার কাজই করে যান তিনি। লোক দেখানো একটি ফার্মাসির ব্যবসাও সামলান একই সঙ্গে।
.
শুনে চোখ ছানাবড়া হবার যোগার! কিন্তু একথা সত্য। দীপক দাস নিজেই স্বীকার করেছেন সেকথা। দেশের প্রসিদ্ধ প্রথমশ্রেণীর ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছে দীপক দাস।
.
‘আইটি ই য়োদ্ধা’, এই নামেই দলের অভ্যন্তরে তাদের পরিচয়। হাওড়ায় অনুষ্ঠিত সোশ্যাল মিডিয়ার ওয়ার্কশপে তাঁর মত অন্যান্য যোদ্ধাদের শেখানো হয়েছে আইটি যুদ্ধের রণকৌশল।এই ওয়ার্কশপে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির মহা সেনাপতি অমিত শাহ। আইটি সেলের ডু’স ও ডোন্ট’স বিষয়ে তিনি স্বয়ং পাঠ পরিয়েছেন দীপক দাসদের।
.
দলীয় র্যালি হোক বা পার্টি অফিস, বাড়ির মধ্যে থাকুন বা দোকানে সর্বদাই আঠার মতো তাঁর চোখ লেগে থাকে হাতের দুটো স্মার্টফোনে।বিন্দুমাত্র সময় নষ্টের পক্ষে নন তিনি। তাই সকাল ৬ টা থেকেই লেগে পড়েন কাজে। পুলওয়ামা হামলার পর পুরো রাজ্য জুড়ে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার জোড়ালো দাবি তোলা হোক বা মোদি বিরোধীদের পাকিস্তান পাঠানোর দাবি হোক এসব দ্রুত হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে যথেষ্ট ‘নিষ্ঠাবান’ দীপক বাবু।নাওয়া খাওয়া ছেড়ে এই সময় তিনি ২৪ ঘন্টাই ডিউটি দেন।
.
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সাক্ষাৎকারে বিজেপির এই ‘আইটি ইয়োদ্ধা’ জানিয়েছেন, তাঁর দুটি স্মাটফোনের একটিতে ২২৯ টি এবং অন্যটি থেকে ৮৮৫ টি হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ পরিচালনা করেন তিনি। প্রতিটি গ্রুপে কমপক্ষে ৩০ জন থেকে ২৫০ জন ‘সদস্য’ থাকেন। প্রতিদিনই কিছু নতুন লোক ওইসব গ্রুপে যোগ দেন আবার ২ একজন গ্রুপ ছেড়ে ‘লেফট’ হয়ে যান।
.
এত বিপুল সংখ্যক লোকের ফোন নম্বর তিনি বা তাঁরা পেলেন কোথায়! “প্রথমদিকে আমরা লোকদের বাড়ি বাড়ি যেতাম, দলের প্রচার করতে বা গভর্নেন্স সম্পর্কে বোঝাতে। তখন বহু মানুষের ফোন নম্বর সংগ্রহ করি। এছাড়া জাতীয় স্তরে সদস্য সংগ্রহ অভিযানেও আমরা বহু নম্বর খুব সহজেই হাতে পেয়ে গেছি।” দীপক দাস জানিয়েছেন পত্রিকাটিকে।
.
উচ্চমাধ্যমিক দেওয়ার পর আর্থিক কষ্টের কারণে পড়াশোনা আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি দাসের। ২০১৪ সালে ‘নরেন্দ্র মোদির জন্য’ বিজেপি যোগ দেন। তখনই তাকে ব্লকের সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে প্রথম অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিজেপির প্রচার অভিযান। কাজে খুশি হয়ে পার্টি থেকে দশ হাজার টাকা দিয়ে আরো একটি স্মার্টফোন কিনে দিয়েছেন অতিরিক্ত পাওয়ার ব্যাঙ্ক সহ। এছাড়াও যাতায়াতের টিএ বিলও পরিশোধ করে পার্টি। সবই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন ‘আইটি ই য়োদ্ধা’ দীপক বাবু।