বেহালায় বরো চেয়ারম্যান পদের দাবিদার একাধিক তৃনমূল কাউন্সিলর
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত বেহালার ১৪ নম্বর বরো কমিটি এবং ১৬ নম্বর বরো কমিটির চেয়ারম্যান পদ বহুদিন আগে থেকেই শূন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কারণ ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূল কাউন্সিলর মানিক লাল চট্টোপাধ্যায় এবং ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূল কাউন্সিলর ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্য মারা যাওয়ায় দীর্ঘদিন যাবৎ বরো চেয়ারম্যানের এই পদ দুটি শূন্য অবস্থায় ছিল। পাশাপাশি ১২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা ১৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তবে এবার তিনি নির্বাচনে লড়ে জয়ী হলেও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব তিনি নাও নিতে পারেন। এক্ষেত্রে এই তিনটি বরোতেই নতুন চেয়ারম্যান নির্বাচন করা হবে বলে খবর। শুধু এই তিনটি নয়, পুর নির্বাচনের পর রীতি অনুযায়ী কলকাতা পুরসভার ১৬ টি বরোতেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবেন সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলররা।
তবে বিশেষ করে ১৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর বরো চেয়ারম্যান পদের দাবিদার একাধিক বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত : বেহালার ১৩ নম্বর বরোর অধীনে রয়েছে ১১৫, ১১৬, ১১৭, ১১৮, ১১৯, ১২০ ও ১২২ নম্বর ওয়ার্ড। ১৪ নম্বর বরোতে রয়েছে ১২১, ১২৭, ১২৮, ১২৯, ১৩০, ১৩১ ও ১৩২ নম্বর ওয়ার্ড। পাশাপাশি জোকা অঞ্চলে ১৬ নম্বর বরোর অধীনে রয়েছে ১২৩, ১২৪, ১২৫, ১২৬, ১৪২, ১৪৩ ও ১৪৪ নম্বর ওয়ার্ড। মোট এই ২১ টি ওয়ার্ডের সব আসনেই জয়ী হয়েছে তৃনমূল প্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, অসুস্থ থাকার কারণে পুরসভার অধিবেশন থেকে শুরু করে ১৩ নম্বর বরো অফিসেও দীর্ঘদিন নিয়মিত উপস্থিত থাকতে পারেননি চেয়ারম্যান সুশান্ত ঘোষ। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি তার শারীরিক কারণে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি চাইতে পারেন। সেক্ষেত্রে এই বরোতে চেয়ারম্যান পদের দাবিদার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রত্না শুর। অবশ্য তিনি কলকাতা পুরসভার চিফ হুইপ। তাই তাকে এবার সেখানে যদি কোনো দায়িত্বশীল পদে রাখা না হয়, তবে ১৩ নম্বর বরো চেয়ারম্যান পদের তিনিই প্রধান দাবিদার। অন্যথায়, ১১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দীঘদিন ধরে জিতে আসা কাউন্সিলর কৃষ্ণা সিংকেও দায়িত্ব দিতে পারে দল।
মনিকলাল চট্টোপাধ্যায়ের অবর্তমানে ১৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসতে পারেন ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদ্য জয়ী পার্থ সরকার। তবে তিনি এবারেই প্রথম কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তিনি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে। অন্যথায় ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সঞ্চিতা মিত্র এই পদের অন্যতম দাবিদার। কারণ তিনি এবার নিয়ে মোট টানা পাঁচ বারের কাউন্সিলর। অভিজ্ঞতা ও পুর পরিষেবার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে, দল তাকে অগ্রাধিকার দিতে পারে।
১৬ নম্বর বরো চেয়ারম্যানের পদে আসতে পারেন ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদীপ পোল্লে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই ওয়ার্ড থেকে জিতে আসছেন। এলাকায় পুর পরিষেবা এবং অভিজ্ঞতায়ও তিনি এগিয়ে। উপরন্তু তিনি ফিরহাদ হাকিমের ঘনিষ্ঠ। পাশাপাশি অভিজ্ঞতা ও কাজের নিরিখে ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঘনশ্রী বাগও অন্যতম দাবিদার। তবে ২০১৫ সালে কলকাতা পুরসভার এ্যাডেড ওয়ার্ড হিসেবে ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রঘুনাথ পাত্রকেও গুরুত্ব দিচ্ছে দল। পুর পরিষেবা, জন-সংযোগ, দলীয় সাংগঠনিক দক্ষতার নিরিখে এগিয়ে রয়েছেন তিনিও। এবার ১৪ হাজারেরও বেশি ভোটে বিজয়ী হয়েছেন রঘুনাথ পাত্র।
এখন দেখার — কোন বরোতে কে হবেন আগামী দিনের চেয়ারম্যান !