বেহালার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে বহিরাগত প্রার্থী চাইছেন না দলীয় কর্মী থেকে শুরু করে ওয়ার্ডের বাসিন্দারা, চাইছেন ওয়ার্ডেরই দক্ষ সংগঠককে
( ABN News এর পরিক্রমায় ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড….)
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : আগামী ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে চলেছে কলকাতা ও হওড়া পুরসভা নির্বাচন, সূত্রের এমনই খবর। এই ভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে কে কোন ওয়ার্ডে প্রার্থী হবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তৎপরতা । বিগত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পর্যদুস্ত করার পর এখন শাসকদল তৃণমূলে টিকিটের চাহিদা স্বাভাবিক ভাবেই তুঙ্গে। দলীয় কর্মীরা অনেকেই এই মুহূর্তে টিকিটের দাবিদার। এবিএন নিউজের পক্ষ থেকে শনিবার (৬ অক্টোবর) বেহালার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে একটি পরিক্রমা করা হয় যে, এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে কাকে চাইছেন ! কারণ এই ওয়ার্ডটি এখন সিপিএমের ক্ষমতাসীন ওয়ার্ড। এখানকার বর্তমান কো-অর্ডিনেটর তথা কাউন্সিলর সিপিএমের রত্না রায় মজুমদার। যিনি কলকাতা পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী তথা হেভিওয়েট প্রার্থীও বটে। স্বাভাবিক কারণেই তার বিরুদ্ধে তৃণমূলের কাকে দাঁড় করাবে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দলের মধ্যে অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত: সিপিএমের রত্না রায় মজুমদার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০ বছরের কাউন্সিলর। তিনি অপরাজিত কাউন্সিলর। তিনি কোনোবারেই পরাজিত হননি। তবে গত ২০১০ সালের নির্বাচনে তিনি না দাঁড়ানোয় সেবার তৃণমূলের দোলা সরকার সিপিএম-এর নবাগত প্রার্থীকে পরাজিত করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার পরের বারেই (২০১৫) দোলা সরকার পরাজিত হন সিপিএমের রত্না রায় মজুমদারের কাছে। তবে কিছুদিন আগে অকালেই প্রয়াত হয়েছেন দোলা সরকার। সুতরাং এই ওয়ার্ডে রত্নাদেবীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রার্থী দিতে হলে সাংগঠনিক ভাবে দক্ষ ও যোগ্য এমন প্রার্থীকেই টিকিট দিতে হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
বিষয়টি নিয়ে এবিএন নিউজের পক্ষ থেকে শনিবার একটি পরিক্রমা করা হয়। এই ওয়ার্ডে কলোনী এলাকার মধ্যে বাসুদেবপুর অঞ্চলে গোলাম বস্তি, বেচারাম চ্যাটার্জী রোডের বঙ্কিম পল্লী, ডাঃ অক্ষয় কুমার পাল রোডের মনসা মন্দির ভূষণ পল্লী, বিদ্যাসাগর কলোনী ইত্যাদি। এছাড়া মুসলিম এলাকার মধ্যে ডাঃ অক্ষয় কুমার পাল রোডের মধ্য পাড়ায় কিছু অংশ, মসজিদ পাড়া, বাসুদেবপুর, পড়ুই পাকা রোড, পরুই কাচা রোড, পেটলি পাড়া, বিধুভূষণ সেনগুপ্ত রোড ও মসজিদ সংলগ্ন এলাকা। আর বেচারাম চ্যাটার্জী রোড, ডাঃ অক্ষয় কুমার পাল রোডের কিছু অংশ, বেলেডাঙার বেশ কিছু হিন্দিভাষী অঞ্চল সহ এই ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গা পরিক্রমা করে বাসিন্দাদের যা মতামত পাওয়া গেল সেটাই এখানে তুলে ধরা হচ্ছে।
বিষয়টা এই যে, ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের এইসব এলাকার অধিকাংশ তৃণমূল কর্মী ও বাসিন্দারা জানান, তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে তারা কোনও বহিরাগত প্রার্থীকে কোনোভাবেই মেনে নেবেন না। এমনকি কিছু প্রমোটরও চাইছেন তারা প্রার্থী হবেন, অথচ করোনা আবহে ও লকডাউন পরিস্থিতি সহ অন্যান্য কোনো সামাজিক ও দলীয় কাজে তাদের কোনও ভূমিকাই নেই বলে জানান অধিকাংশ তৃণমূল কর্মীরা। অথচ এখন তারা তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার লক্ষ্যে মশগুল বলে অভিযোগ।
আপনারা কেমন মানুষকে আপনাদের ওয়ার্ডে প্রার্থী হিসেবে পেতে চান ? সাংবাদিকের এমনই এক প্রশ্নে তারা বলেন, প্রথমত: ওয়ার্ডের বাসিন্দা হতে হবে, যাতে আমরা আমাদের বাসিন্দাদের বিপদে-আপদে-সমস্যায় তাকে কাছে পাই। তাই এখানে বহিরাগত প্রার্থীকে আমরা মেনে নেব না। দ্বিতীয়ত: সাংগঠনিক দক্ষতা ও যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তি হতে হবে, সামাজিক কাজে ও বিপদে-আপদে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারবে…. এমন মানুষই আমরা চাই।
সর্বোপরি এই ওয়ার্ডের মানুষের দাবি, ৩০ বছরের অপরাজিত সিপিএম কাউন্সিলর রত্না রায় মজুমদারের বিরুদ্ধে যিনি বহু মানুষকে সংগঠিত করে সাংগঠনিক ভাবে লড়াই দিতে পারবেন, তাকেই চান তারা। কারণ যতই হোক রত্না রায় মজুমদার কিন্তু এখানে হেভিওয়েট প্রার্থী তাতে কোনও সন্দেহ নেই, তাই তার বিরুদ্ধে জোর লড়াই করার মতো সংগঠন করা দক্ষ কোনো নেতাকে এখানে তৃণমূলের প্রার্থী করলেই সিপিএমের প্রার্থীকে পরাজিত করার পথ সুগম হবে বলে জানান তারা। এখন দেখার বিষয় দল এই ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাকে প্রার্থী করে !