উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহলে প্রত্যাশিত সংখ্যায় আসন জিতবে না বিজেপি, কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের হিন্দুরাও মুখ ফেরাচ্ছে বিজেপির থেকে” কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার গোপন রিপোর্ট অমিত শাহকে
তৃণমূল বিরোধী ভোটে ভাগ বসাচ্ছে বাম জোট: গোপন রিপোর্টে কপালে ভাঁজ গেরুয়া শিবিরের
ওয়েব ডেস্ক :- বাংলায় বিজেপির পক্ষে এককভাবে একুশের নির্বাচনে ২০০ আসন জেতা সম্ভব হবে না। উত্তরবঙ্গের ৫৪ বিধানসভা এবং জঙ্গলমহলের যে ৩৫ বিধানসভায় গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ভালো ফল করেছিল, দলের সাংগঠনিক নেতাদের ব্যর্থতায় সেখানে অ্যাডভান্টেজ পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল।” মনির বিস্ফোরক তথ্য নিজেদের গোপনে রিপোর্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর কাছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা জমা দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার গোপন রিপোর্টে দুটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রথমত, শুভেন্দু অধিকারীর মত কয়েকজন নেতা অত্যন্ত উগ্রতার সঙ্গে নন্দীগ্রাম এবং রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার সংখ্যালঘু মুসলমানদের পাকিস্তানি বলে বারে বারে প্রকাশ্য জনসভায় থেকে আক্রমণ করায় মুসলমান ভোটাররা সম্পূর্ণভাবে বিজেপি থেকে মুখ ফেরানোর পাশাপাশি কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গের প্রায় আড়াই কোটি শিক্ষিত হিন্দু ভোটার বিজেপি নেতাদের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে তৃণমুলকেই বেছে নিচ্ছেন।
দ্বিতীয়ত, কোচবিহারের শীতলকুচি তে যেভাবে কোনরকম প্ররোচনায় ছাড়াই শুধুমাত্র স্থানীয় কয়েকজন বিজেপি নেতার নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের বেছে বেছে সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপরে গুলি চালিয়ে প্রাণে মেরে ফেলেছে, তারপরে বাংলার সাধারণ ভোটারদের কাছে বিনয়ীভাবে ভোট ভিক্ষা করার পরিবর্তে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বিভিন্ন প্রকাশ্য জনসভায় থেকে যেভাবে পরবর্তী ভোটগ্রহণের দিন গুলিতে এনকাউন্টার করে মেরে ফেলার কথা ঘোষণা করছেন, তাতে আতংকিত বোধ করছেন বাংলার সাধারণ মানুষ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিজ্ঞাপন রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে বাংলার শীর্ষ পদে আসীন বিজেপি নেতাদের অমিত শাহ নিজের নিজে ফোন করে তীব্র তিরস্কার করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হয় অমিত শাহ দক্ষিণ বঙ্গের বিজেপি নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন যেভাবেই হোক এবারের বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ১০০ আসনে জয় নিশ্চিত করে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হবে।
প্রায় অর্ধেক ভোট হয়ে গিয়েছে বাংলায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনসভায় দাঁড়িয়ে ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, বিজেপি সেঞ্চুরি করে ফেলেছে। অর্থাৎ ভোট হয়ে যাওয়া ১৩৫টি আসনের মধ্যে ১০০টি আসন পেয়ে গিয়েছে বিজেপি। কিন্ত বিজেপির অন্দরের খবর একটু অন্যরকম। তাঁরা এবার ভোটে হঠাৎ চিন্তিত বাম-জোটকে নিয়ে।
সূত্রের খবর, বিজেপির চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে সিপিএম তথা বামেরা। বিজেপি নিশ্চিত হতে পারছে না তৃণমূল বিরোধী ভোট সব তাঁদের বাক্সে আসছে কি না। তারা মনে করছে, বেশকিছু আসনে তৃণমূল বিরোধী ভোট বামেদের দিকে গিয়েছে। বামেদের দিকে সেই ভোট যাওয়া মানে ফলাফল অন্যরকম হয়ে যেতে পারে।
বিজেপি একপ্রকাশ নিশ্চিত এবার তৃণমূল বিরোধী ভোট পড়ছে ব্যাপকভাবে। এখন এই অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি বা সরকারবিরোধী ভোট বিজেপিতেই পড়ছে নাকি তা ভাগ হয়ে যাচ্ছে, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। বেশ কিছু আসনে যে তা হয়েছে, অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস-বিরোধী ভোট বিজেপির পাশাপাশি একটা বড় অংশ বামেরা পেয়েছে, তা নিশ্চিত।