দেবাশীষের শূন্যতায় অনেক বড় বড় মিডিয়ার সাংবাদিকেরও খবর করা এত সহজসাধ্য হবে না, আলিপুর প্রেস কর্নারে বললেন সাজাহান সিরাজ

Spread the love

দেবাশীষের শূন্যতায় অনেক বড় বড় মিডিয়ার সাংবাদিকেরও খবর করা এত সহজসাধ্য হবে না, আলিপুর প্রেস কর্নারে বললেন সাজাহান সিরাজ

পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : অকালে প্রয়াত সাংবাদিক দেবাশীষ মালিকের স্মরণ সভায় আয়োজন করেছিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্টস এ্যাসোসিয়েশন। বুধবার (৭ অক্টোবর) আলিপুর প্রেস কর্ণারে অনুষ্ঠিত এই সভায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাজাহান সিরাজ বলেন, “দেবাশীষের শূন্যতায় এখন অনেক বড় বড় মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের খবর এত সহজেই আর পৌঁছুবে না। কারণ দেবাশীষের সঙ্গে নেতা-মন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসন ও একেবারে গ্রাউন্ড লেবেলের মানুষের সঙ্গে একটা নিবিড় সম্পর্ক ছিল। যারফলে, যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার খবরও মুহূর্তের মধ্যে পৌঁছে যেত তার কাছে। তাই বড় বড় দৈনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অনেকটাই ভরসা ছিলেন দেবাশীষ মালিক। ওর কাছ থেকে খুব সহজেই খবরগুলো পৌঁছে যেত তাদের টেবিলে। কিন্তু এখন ওর শূন্যতায় খবর পাওয়া ও খবর করা খুব একটা সহজসাধ্য হবেনা তাদের। জেলার খবর মানেই দেবাশীষ মালিক।”

তিনি আরও বলেন, “গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতেও ওর সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছিল। ও বলেছিল ওর শরীরটা খারাপ। আমি বললাম, ‘করোনা’ টেস্ট করিয়ে নিও। রুটিন মাফিক প্রতিদিনই আমার শেষ ফোনটা আসত দেবাশীষের কাছ থেকে। আমার কাছে ওটাই ছিল ওর শেষ ফোন। ১ অক্টোবর মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই দেবাশীষ চলে যাবে এটা কখনোই বুঝতে পারিনি। শেষের দিকে ও খুবই অর্থ-কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল। কিন্তু কাউকে এই অর্থ-কষ্টের কথা বুঝতে দেয়নি, এমন কি আমিও জানতাম না। তবে জেলার এক মন্ত্রীকে বলেছি, ওর স্ত্রীর জন্য যদি একটা কাজের ব্যবস্থা করা যায় !”

এদিনের এই স্মরণ সভায় উপস্থিত দীর্ঘদিনের সহকর্মী সাংবাদিক কুণাল মালিক, পরিমল কর্মকার, অমর নস্কর, বরুণ মণ্ডল, সুদীপ দাস, জয় গুহ  দিবাকর দত্ত, আরিফুল ইসলাম, স্বপন রায় ও অন্যান্য সাংবাদিকেরা সকলেই তাদের বক্তব্যে বলেন, “নিজেদের উদ্যোগে ও প্রশাসনের সহযোগিতায় অবিলম্বে দেবাশীষ মালিকের স্ত্রীর হাতে কিছু অর্থ সাহায্য তুলে দেওয়া একান্তই দরকার।” এদিন তাঁর ছবিতে মালা দিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন উপস্থিত সাংবাদিকরা।

উল্লেখ্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপীর শিক্ষক পল্লীর বাসিন্দা দেবাশীষ মালিক (৪৫)। বহু প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিল। প্রায় ২০/২১ বছর ধরে দৈনিক, সাপ্তাহিক সংবাদপত্র সহ পোর্টাল মিডিয়াতেও সাংবাদিকতা করে চলেছিলেন।

সম্প্রতি অল্প কয়েকদিন সর্দি, জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। ৩/৪ দিন দিন ছোট একটি নার্সিং হোমে ভর্তি থাকার পর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়, তবে করোনা টেস্ট না হওয়ায় জানা যায়নি তার করোনা হয়েছিল কিনা ! ১ অক্টোবর তাকে ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তির জন্য আনা হলেও অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যেই তিনি মারা যান। অভিযোগ, গুরুতর অসুস্থ দেবাশীষবাবুকে করোনা রোগী ভেবে হাসপাতালের কর্মীরা কেউই স্ট্রেচার নিয়ে এগিয়ে আসেননি। দীর্ঘক্ষণ ওই অবস্থায় পড়ে থাকার ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গিয়েছেন তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা মালিক ও একাদশ শ্রেণীতে পঠরত পুত্র ও কন্যাকে। কন্যার অবশ্য ইতিপূর্বে বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.