ভয়ংকর তথ্য প্রকাশ্যে এল। গত ১ মার্চ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ ছয় মাসের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে সারা দেশে ৪১৩টি ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যসভায় এদিন এমনই তথ্য জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নিউজ ডেস্ক :- ভুমিকম্প যেন এখন নিত্য নৈমত্তিক ঘটনা। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোনও না কোনও প্রান্ত থেকে ভূমিকম্পের খবর আসছে। এরই মধ্যে সরকারের তরফে জানানো হল, পয়লা মার্চ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর, এই ছয়মাসের সামান্য কিছু বেশি সময়ের মধ্যে সারা দেশে ৪১৩টি ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল নেটওয়ার্কে ওই রেকর্ড ধরা পড়েছে। মঙ্গলবার এমনই তথ্য জানিয়েছে মিনিস্ট্রি অফ আর্থ সায়েন্স। আর এই তথ্য সামনে আসতেই ভয়ংকর বিপদের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
উল্লেখ্য, ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল নেটওয়ার্ক আদতে ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির দ্বারা পরিচালিত হয়। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি দেশের মধ্যে ভূমিকম্প সনাক্ত করে থাকে। এদিন রাজ্যসভায় এই সূত্রেই জানানো হয়েছে, ১ মার্চ থেকে ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ন্যাশনাল সিসমোলজিক্যাল নেটওয়ার্কে দেশে ৪১৩ ভূমিকম্প নথিভুক্ত হয়েছে।
তবে, সব ভূমিকম্পের কম্পনই যে বেশি ছিল তা নয়। তথ্য অনুযায়ী, ১৩৫ টি ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলের তিনেরও কম। সেক্ষেত্রে তেমন কিছু অনুভূত হয়নি। তবে, ১৫৩ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩ থেকে ৩.৯-এর মধ্যে। অল্প মাত্রার হলেও এই ভূমিকম্পগুলি টের পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ১১৪ টি ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৪ থেকে ৪.৯-এর মধ্যে। উত্তর-পূর্ব ভারত-সহ দেশের বহু জায়গায় এই ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। তবে, এই ছমাসের মধ্যে দেশে ৫ থেকে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে ১১ টি। মাঝারি মাত্রার এই ভূমিকম্পগুলিতে অনেক জায়গাতেই বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, যে কোনও সময় এই ধরনের ভূমিকম্পের পরাঘাত আসতে পারে। ভূমিকম্প ঘটে যাওয়ার দুই মাস পরেও এই ধরনের ঝুঁকি থেকে যায়। এই পালটা কম্পন কখন হবে, তা বলা সম্ভব নয়। এটা প্রতিরোধেরও কোনও উপায় নেই। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পূর্ব সতর্কতা জরুরি।
বিজ্ঞানীদের দাবি, হিমালয়ের পাদদেশের জায়গাগুলিতে ভূতাত্ত্বিক কারণেই এত ভূমিকম্পের উৎপত্তি। আড়াই কোটি বছর আগে পৃথিবীতে ভারত একটি আলাদা দ্বীপ ছিল, যা দ্রুত সরে এসে এশিয়ার সঙ্গে ধাক্কা খায়। মধ্য এশীয় টেকটোনিক প্লেটের নিচ দিয়ে ভারতীয় প্লেট অতি ধীরে ধীরে ঢুকে যাওয়ার ফলে এখানকার পর্বতগুলো এখনও আকার পাচ্ছে। প্রতি বছর এই দুটি প্লেট দুই ইঞ্চি করে পরস্পরের দিকে সরে আসছে। এতে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচণ্ড চাপ। ফলে ঘটছে ভূমিকম্পের মতো ঘটনা।
শুধু উত্তর-পূর্ব ভারতই নয়, দিল্লি, গুজরাত, জম্মু-কাশ্মীরেও নিয়মিত হারে হচ্ছে ভূমিকম্প। করোনার প্রকোপে যখন প্রাণ ওষ্ঠাগত, তখন গত ৬ মাসের মধ্যে গোটা দেশ বারবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠছে৷ বারবার মাটি নড়ে উঠতেই দিল্লি-সহ উত্তর ভারত আবার এদিকে উত্তর-পূর্বের বিস্তীর্ণ অংশে জল্পনা শুরু হয়েছে আগামী দিন নিয়ে৷ এ কি কোনও বড় ভূমিকম্পের আগে ট্রেলার দেখাচ্ছে প্রকৃতি? সামনে ভয়ানক ক্ষতি, এ কি তারই আভাস?