শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে নামাজ আদায় দুই ব্যক্তির, অস্থির সময়ে সম্প্রীতির সুগন্ধ মিশল বাতাসে
আবার দু দিন পরে এফ আই আর
মথুরার মন্দিরে নমাজ পড়ার জের, FIR চার ব্যক্তির নামে
নিউজ ডেস্ক :- মথুরার নন্দগাঁও এর বিখ্যাত নন্দবাবা মন্দিরে এই দুই মুসলিম ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি নামাজ আদায় করলেন। তাঁদের এমন উদ্যোগ সম্প্রীতির বার্তা বয়ে আনল। বিশেষ করে এই অস্থির সময়ে, যখন কিনা দেশে প্রায়ই হিন্দু-মুসলমান হানাহানির খবর শোনা যায়। রামচরিত মানস-এর পংক্তির উল্লেখ করে ফয়সাল খান বললেন, এই দুনিয়ায় ভালবাসা সব থেকে বড় ধর্ম। শ্রীকৃষ্ণ ভালবাসা বিলিয়েছেন। তাঁর বিলিয়ে দেওয়া প্রেমে সবার অধিকার রয়েছে। কোন ধর্মই মানুষের সঙ্গে মানুষের বিভেদ শেখায় না। ফয়সাল খান ও মহম্মদ চাঁদ দিল্লির অধিবাসী। দুজনেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছেন তীর্থযাত্রায়। তাঁদের এই যাত্রায় বেশিরভাগ রয়েছে হিন্দু মন্দির দর্শন এর পরিকল্পনা।এদিন যেমন তাঁরা চলে এলেন নন্দবাবা মন্দিরে। সেই মন্দিরের সেবায়েত কৃষ্ণ মুরারী গোস্বামী তাঁদের প্রসাদ খেতে দিলেন। ফয়সাল খান ও মহম্মদ মহাআনন্দে প্রসাদ খেলেন। শ্রীকৃষ্ণ দর্শন করলেন। তারপর মন্দির চত্বরেই পয়গম্বর আল্লাহর উপাসনা করলেন।
আবার দুই দিন পর ঐ দু জন ব্যাক্তিদের উপর FIR এর খাঁড়া ।
উত্তরপ্রদেশের মথুরার একটি মন্দিরে নমাজ পড়ার জেরে প্রবল উত্তেজনা ছড়াল। এর ফলে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি-সহ চার জনের এফআইআর দায়ের হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৯ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মথুরা র নন্দগাঁও এলাকার নন্দ বাবা মন্দিরে বিনা অনুমতিতে নমাজ পড়েন ফইজল খান ও চাঁদ মহম্মদ নামে দুই ব্যক্তি। আর তাঁদের নমাজ পড়ার ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেন অলোক রতন ও নীলেশ গুপ্তা। আর তারপরই শুরু হয় বিতর্ক। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মুকেশ গোস্বামী, শিবহরি গোস্বামী ও কানহা নামে তিন ব্যক্তি ওই চারজনের নামে থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছেন।
ওই এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চার জন অভিযুক্ত দিল্লির একটি সংগঠন ‘খুদাই খিদমতগার ’-এর সদস্য। গত ২৯ অক্টোবর তাঁরা বিনা অনুমতিতে নন্দগাঁও এলাকার ওই মন্দিরে নমাজ পড়েছেন। তাঁদের এই আচরণের ফলে হিন্দুদের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে। আমাদের আশঙ্কা এই ধরনের ছবির অপব্যবহার করা হতে পারে। এই ঘটনার পিছনে বিদেশ থেকে অর্থ সাহায্য করা হচ্ছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে উচিত। আমাদের অনুমান, সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর জন্যই এই কাজ করা হয়েছে।’
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার রাতে তিন ব্যক্তি এই বিষয়ে একটি এফআইআর দায়ের করেছেন। তার ভিত্তিতে তদন্তও শুরু হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় ওই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির তৈরির অনুমতি মেলার পরেই মথুরা ও কাশীর প্রসঙ্গও উঠে আসে। বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের তরফে সেসময় স্লোগান তোলা হয়েছিল, অযোধ্যা তো ঝাঁকি হ্যায়, আভি কাশী-মথুরা বাকি হ্যায়। তাদের ইঙ্গিত ছিল, মথুরা ও কাশীর বিতর্কিত জমিতে থাকা মসজিদগুলির উপরে। কিন্তু, সেখানে কিছু হওয়ার আগেই মথুরার নন্দ বাবা মন্দিরে নমাজ পড়ার ঘটনা নতুন বিতর্ক তৈরি করল।
সৌজন্য :- জি নিউজ ও সংবাদ প্রতিদিন