কলকাতায় আন এডেড মাদ্রাসা শিক্ষকদের আন্দোলনে পুলিশের অমানবিক অত্যাচার
নিজস্ব প্রতিবেদক: মঙ্গলবার রাজ্যের রেকগনাইজ এডেড মাদ্রাসা শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবিতে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান-বিক্ষোভের কর্মসূচি ছিল। তাঁদের অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকার অনুমোদিত 235 টি আন-এডেড মাদ্রাসার 40 হাজার ছাত্র-ছাত্রী বিগত নয় বছর ধরে মিড ডে মিল ও সকল রকম সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। 2500 শিক্ষক-শিক্ষিকা সম্পূর্ণরূপে পারিশ্রমিক বিহীন।
এদিন সকাল নটার পর থেকেই ধর্মতলা চত্বরে আবতো শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পুলিশ এক এক জন করে ধরে নিয়ে লালবাজারে নিয়ে যায়। এবং সকাল এগারোটার কিছু পূর্বেই শিক্ষকদের একটা অংশ যখন মিছিল করে গান্ধী মূর্তির দিকে এগোতে থাকে তখন তাদেরকেও ধরপাকড় করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিকগনাইজ এডেড মাদ্রাসা শিক্ষকদের অন্যতম নেতা আরসাদ উজ্জামান এক বিবৃতিতে জানান বেঙ্গল আর্মির পারমিশন নিয়ে লালবাজার ও করপোরেশনকে জানিয়ে তিনদিনের অবস্থান বিক্ষোভে বসার জন্য গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বেছে নিয়েছিলাম। শতাধিক শিক্ষক শিক্ষিকা যখন আমার প্রেসক্লাবের উপর দিয়ে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে যাচ্ছিলাম তখন প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশ প্রশাসন অমানবিক এবং নির্মমভাবে আমাদের শিক্ষকদের উপর পাশবিক অত্যাচার করে। কিল চড় লাথি এমনকি জামার কলার ধরে টেনে হিচড়ে অমানবিকভাবে গাড়িতে তুলে লালবাজারে নিয়ে গেছে। শিক্ষিকাদের প্রকাশ্য পেটে লাথি মারা হয়েছে। লালবাজার এসে শিক্ষিকাদের মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে তবে এক ঘন্টা হয়ে গেল কোন মেডিকেল পরিষেবা দেয়নি।
তিনি আরো বলেন বিগত দিনে ফিরহাদ হাকিম সহ একাধিক মন্ত্রী বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এখন অস্বীকার করছে। আমরা যেন অভিভাবক হীন। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কেউ নেই।
ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সিপিএম নেতা মোহাম্মদ সেলিম এক বিবৃতিতে বলেন,মুখ্যমন্ত্রী ১০ হাজার মাদ্রাসা অনুমোদনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।সেটা তো দূরের কথা সরকার অনুমোদিত ২৩৫ টি মাদ্রাসায় দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ৪০ হাজার ছাত্রছাত্রী মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত। দীর্ঘ ৯ বছর বেতনহীন শিক্ষক শিক্ষিকারা। দাবি জানানোর, প্রতিবাদ করার অধিকার
পর্যন্ত কেড়ে নিয়েছে। পূর্ব ঘোষণা মতো আজ গান্ধীমূর্তির কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ করে ও গ্রেপ্তার করে লালবাজারে নিয়ে যায়।
মাদ্রাসা শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশি অত্যাচার ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক মহঃ কামরুজ্জামান, পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা ছাত্র ইউনিয়নের সাজিদুর রহমান, রাকিব হক, বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের দায়িত্বশীল আশিকুল ইসলাম সহ অন্যান্যরা।