নিউজ ডেস্ক:- এ যেন উলট পুরাণ। যে কাশ্মীরি পণ্ডিতরাা এতদিন উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হত, এবার তারাই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করল। আগামী ৫ আগস্ট কেন্দ্রের মহাবিতর্কিত ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বর্ষপূর্তি। তার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সরকারের কাছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সংগঠন ‘(পুনর্মিলন, মুক্তি এবং পুনর্বাসন) -এর আবেদন, উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা (Special Status) এবং সংবিধানের ৩৭০ পুনর্বহাল করে আবার সবকিছু আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
অভিবাসী কাশ্মীরি পণ্ডিতদের এক সংগঠন অবিলম্বে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের তকমা এবং বিশেষ মর্যাদা ফিরিয়ে দেবার দাবি জানালো। সোমবার ‘রিকনসিলিয়েশন, রিলিফ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন’ নামক অভিবাসী কাশ্মীরি পণ্ডিতদের এক সংগঠনের পক্ষে চেয়ারম্যান সতীশ মহালদার এক বিবৃতিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সাংসদদের কাছে এই দাবি জানান।
সংগঠনের পক্ষ থেকে সতীশ মহালদার বলেন, আমরা দাবি করছি অবিলম্বে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের তকমা এবং বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন – ভারতীয় সংবিধান দেশের প্রতিটি নাগরিক, প্রতিটি সম্প্রদায়, প্রতিটি গোষ্ঠী এবং প্রতিটি অঞ্চলকে সম সামাজিক এবং রাজনৈতিক অধিকার দিয়েছে। এই সম অধিকার প্রতিটি নাগরিকের ধর্ম, জাতি, অঞ্চল সহ যেকোনো সামাজিক এবং রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করে। এর আগে কখনও কোনো রাজ্যকে এভাবে নীচে নামানো হয়নি। গণতন্ত্রে এটা হতে পারেনা। একজন ব্যক্তি কখনই এক রাজনৈতিক বিষয়ে সামরিক মীমাংসা চাইবেন না এবং নিজের ভাইয়ের সঙ্গে লড়াই করবেন না।
তাঁর আবেদনে মহালদার আরও বলেন – বিষয়টা এরকম নয় যে শুধুমাত্র জম্মু ও কাশ্মীরেরই বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা ছিলো। অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, হিমাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, সিকিম, ত্রিপুরা এবং উত্তরাখন্ডেও এই বিশেষ মর্যাদা আছে। এই সমস্ত রাজ্যে ধারা ৩৭১, ৩৭১-এ থেকে ৩৭১-এইচ পর্যন্ত বলবত আছে। তাই জম্মু ও কাশ্মীরকেও বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
তাঁর আরও দাবী, দেশের পিছিয়ে পড়া অংশ হিসেবে এই অঞ্চলের সংস্কৃতি এবং আর্থিক ভারসাম্য রক্ষায়, সংখ্যালঘুদের স্বার্থে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যের তকমা এবং বিশেষ অঞ্চলের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের সংগঠনটি শুরু থেকেই কেন্দ্রের একাধিক সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে। গতবছর সংগঠনটির একটি প্রতিনিধি দল কাশ্মীরে গিয়ে স্থানীয় হুরিয়ত এবং প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করে। এখন তাঁদের দাবি, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি উপত্যকার পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা এবং ৩৭০ ধারার অধীনে বিশেষ মর্যাদাও ফিরিয়ে দিতে হবে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান সতীশ মহলাদার বলছেন, দেশের অন্য অনেক রাজ্যেই বিশেষ মর্যাদা আছে। সুতরাং কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদায় সরকারের আপত্তি থাকার কথা নয়।