এ্যাড-হক পদ্ধতিতে বিল পাঠানো বেআইনী, হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : রাজ্যের বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি এ্যাড-হক ভিত্তিতে গ্রাহকদের কাছে থেকে ইলেকট্রিক বিল বাবদ যে দাবি করেছে, তা অবিলম্বে বাতিল করা হোক। বেআইনীভাবে বিল পাঠিয়ে এমনভাবে টাকা আদায় বন্ধ বা প্রত্যাহার করতে বলা হোক। এরজন্য তদন্ত সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া দরকার। যে বিল পাঠানো হয়েছে, পরিস্থিতির কারণে তার উপর ছাড় পাওয়া উচিৎ। মিটার রিডিং নিয়ে সঠিক বিল পাঠাতে বলা হোক। এমনই একগুচ্ছ অভিযোগ ও দাবি নিয়ে ২০ আগস্ট একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হলো কলকাতা হাইকোর্টে। উপরন্তু বিদ্যুৎ কর্মীদের গাফিলতির দায় জনগন কেন বইতে যাবেন ? বিদ্যুৎ একটি জরুরী পরিষেবা। তাই লকডাউনের মধ্যে মিটার রিডিং নিতে কি অসুবিধা ছিল ? এইসব নানা কারণ উল্লেখ করা হয়েছে এই মামলায়।
মামলাকারীর প্রশ্ন, মিটার রিডিং না নিয়ে কোন আইনে এ্যাড-হক বিল পাঠানো যায় ? কোন যুক্তিতে এইভাবে গড়পড়তা বিল পাঠানো হচ্ছে ? কোন মাসে কতটা বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে, তা না দেখিয়ে এভাবে বিল পাঠানোর সম্পূর্ণ বেআইনী। এভাবে বিল পাঠানো যায় কি ? আইনের কোন ধারায় এই কথা বলা আছে ? বিদ্যুৎ সংক্রান্ত আইনি ব্যবস্থাকে এভাবে লঙ্ঘন করা যায় কি ?
সংবিধান নাগরিকদের যেসব রক্ষাকবচ দিয়েছে, এর ফলে তা অগ্রাহ্য করা হয়েছে। বিশেষত: এই আতিমারির সময়ে। এমনকি সরকারি নিয়ম-নীতির পরিপন্থী পথ নিয়েছে বিদ্যুৎ সংস্থাগুলি। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার কি করে চুপ করে থাকতে পারে, সে কথাও এই পিটিশনে উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে মানুষের কাছ থেকে বেআইনী উপায়ে টাকা আদায় করার বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়া উচিৎ বলে মামলাকারীর দরখাস্তে উল্লেখ রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ইলেকট্রিক একটি জরুরী পরিষেবা। সেক্ষেত্রে কেন মিটার রিডিং নেওয়া হলোনা ?
প্রসঙ্গত: জরুরী পরিষেবার আওতাধীন হাসপাতাল, ডাক্তার, নার্স, থানা, পুলিশ, দমকল, পুরসভা, দুধ সরবরাহ, ওষুধের দোকান ইত্যাদি যদি লকডাউনের মধ্যে চালু থাকে, এবং এইসব সংস্থার কর্মীরা যদি জনগনকে পরিষেবা দিতে পারেন, তাহলে বিদ্যুতের মিটার রিডিং নেওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ কর্মীরা কি করছিলেন ? মিটার রিডিং নিতে কি অসুবিধা ছিল ? কারণ বিদ্যুৎ পরিষেবাও জরুরী পরিষেবার একটি অঙ্গ। তাই মিটার রিডিং না নিয়ে গড় বিল পাঠানো বেআইনী কাজ বলে অভিমত মামলাকারীর। বিদ্যুৎ কর্মীদের গাফিলতির দায় এখন বিদ্যুৎ গ্রাহকেরা কেন নিতে যাবেন ? এইসব অভিযোগ শুধুমাত্র এই মামলাকারীই নয়, সি ই এস সি-র সঞ্জীব গোয়েঙ্কার বিরুদ্ধে এমনই ভুরি-ভুরি অভিযোগ রাজ্যের মানুষের। এখন দেখার বিষয়, সাধারণ মানুষের কথা ভেবে সি ই এস সি-র বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কি পদক্ষেপ নেয় ?
সূত্র : “বর্তমান”
২১ আগস্ট ২০২০