নিউজ ডেস্ক :- দিল্লিতে পঞ্চাশ বছর বয়স্ক এক মুসলিম মহিলা তাবাসসুম তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের জন্য পথে ভিক্ষে করতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ ২০২০ সালে দিল্লির দাঙ্গায় তার ২২ বছর বয়স্ক উপার্জনশীল ছেলে এক বছর ধরে জেলে বন্দি। মহিলার ছেলে শাহাবুদ্দিন তার সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী সদস্য ছিল। মহিলার স্বামী এবং বড় ছেলে বহুদিন আগেই মারা গেছেন।
তিনি উত্তর-পূর্ব দিল্লির খাজুরি খাশে একটি বাড়িতে থাকেন, যার মাসিক ভাড়া ১০০০ টাকা। সংবাদমাধ্যমকে তাবাসসুম জানিয়েছেন তিনি তার ছোট সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিয়েছেন বাধ্য হয়েছেন। গত বছরের মার্চ মাসে তার ছেলে শাহাবুদ্দিন কাজ থেকে যখন ফিরছিল, তখনই তাকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। বদরপুরে তার ছেলে কাজ করত। আমার ছেলের নামে পুলিশে কেউ অভিযোগ করেছিল– তার পরেই পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়।
তাবাসসুম বলেন, আমার ছেলে ছিল সংসারে একমাত্র রোজগেরে। তার গ্রেফতার হওয়ার পর আমার এবং আমার ছোট সন্তানদের মুখে গ্রাস তুলে দেওয়ার জন্য আমাকে বেছে নিতে হয়েছে ভিক্ষার পথ। কাজের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু পাইনি। একটা গৃহস্থবাড়িতে বাসন ধোয়ার কাজ পেয়েছিলাম কিন্তু আমি মুসলিম বলে আমায় আর সেই বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হল না।
স্থানীয় এক মহিলা সমাজকর্মী চাঁদ বিবি শাহাবুদ্দিনের মামলা হাতে নিয়েছেন। তার অসরকারি সংস্থা ‘সেবা ভারত’ দাঙ্গাপীড়িতদের জন্য কাজ করে থাকে। শাহাবুদ্দিনের এক বন্ধু তাবাসসুমকে ভিক্ষা করতে দেখে বিষয়টা চাঁদ বিবিকে জানান। চাঁদ বিবি হাইকোর্টের একটি আইনজীবীর সঙ্গে শাহাবুদ্দিনের বিষয়ে কথা বলেছেন। আগামী মঙ্গলবার তার জামিনের আবেদন আদালতে পেশ করা হতে পারে।
বাবু নামক জনৈক ব্যক্তির খুনের মামলায় শাহাবুদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এই মামলায় চার্জশিট জমা পড়েছে। চাঁদ বিবি বলেন, তাবাসসুম একজন আইনজীবী ঠিক করেছিলেন তাঁর ছেলের জন্য। কিন্তু তাবাসসুমের কাছে ভিক্ষে করা অর্থ আইনজীবী নিতে চাননি। চাঁদ বিবি সেই আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করে মামলার নথিপত্র চাইলে সেই আইনজীবী সেটা দিতে অস্বীকার করেন।