না বলেই চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক দেবাশীষ মালিক

Spread the love

BREAKING NEWS

না বলেই চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক দেবাশীষ মালিক

পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : আজ (বৃহস্পতিবার ১ অক্টোবর) ভোরবেলা ঘুম আর ভাঙলো না, চিরঘুমের দেশে চলে গেলেন সাংবাদিক দেবাশীষ মালিক, কাউকে কিছু না জানিয়েই। বয়স পঞ্চাশও পেরোয় নি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির বাসিন্দা দেবাশীষ। শোনা যাচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তার মৃত্যু ঘটেছে। তবে বিশদে মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। এলাকায় নির্ভীকতার সঙ্গে খবর পরিবেশনের জন্য তিনি খুবই পরিচিত ছিলেন। কারোর ধামাধরা খবর করার বিপক্ষে ছিলেন তিনি।

সেই ২০০০ সাল থেকে আমার সঙ্গে ওর পরিচয়। খবরের পোকা ছিল ও জেলার যেখানেই কোনও ঘটনা সেখানেই দেবাশীষ। খবরের টানে কুলপি থেকে মাঝে মধ্যেই ছুটে আসত কলকাতায় আলিপুর প্রেস কর্নারে। দেখা হলেই আমার সঙ্গে আড্ডা চলত দীর্ঘক্ষণ। সাংবাদিক সাজাহান সিরাজ, অমর নস্কর, বিমল ব্যানার্জি, চন্দ্রা মিত্র শী এবং আমার সঙ্গে ওর নিবিড় ঘনিষ্ঠতা ছিল। ও যখন আসতো আলিপুর প্রেস কর্নার থেকে ফেরার সময় প্রায়ই ওর গাড়িতে করে আমাকে বেহালায় ছেড়ে দিত।

আমার সঙ্গে ওর সুখ দুঃখের অনেক কথা হতো। যে কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রী কিংবা কোনও দুর্নীতিবাজকে তোষণ করে খবর করাটা ও পছন্দ করতো না। যার ফলে বেশ কয়েকবার তাকে বেশ কিছু নেতা-নেত্রী ও সমাজবিরোধীর ক্ষোভ আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছিল। এব্যাপারে ওর সঙ্গে আমার একটা মনের মিল ছিল। যারফলে ঘনিষ্ঠতা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছিল। লকডাউন পর্বে বহুবার টেলিফোনে ওর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।

গত ফেবরুয়ারির ২৬ তারিখ আমার বড় ধরনের একটি অস্ত্রপোচারের পর লকডাউনের মধ্যে বেশ কয়েকবার আমার শারীরিক খোঁজখবর নিয়েছে। “সুখবর” নামে একটি কাগজে লিখলেও আরও বড় কোনও কাগজে লেখার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছিল। মাসখানেক আগে টেলিফোনে শেষ কথা হয়েছিল ওর সঙ্গে। আমাকে বলেছিল, “লকডাউনের পরবর্তী পর্বে পরিস্থিতি খুব খারাপ কি করে সংসার চলবে ?” ওর কথাটা এখনও আমার কানে বাজজে। আর কোনও দিনও দেবাশীষ আমাকে ফোন করবে না, আলিপুরে প্রেস কর্নারে আসবে না, কারোর পক্ষে এবং বিপক্ষে খবরও করবেনা। আগামী দিনে ওর অনুপস্থিতি আলিপুর প্রেস কর্নারকে অনেকটাই একাকীত্ব করে দিল। …..

“আর কোনোদিনও তোমার সঙ্গে আমার কথা হবেনা, কোথাও কোনোদিনও দেখাও হবেনা দেবাশীষ, তোমার সঙ্গে আমার ও আমাদের সাংবাদিকদের… ভাল থেকো। শুভেচ্ছা রইল আমাদের ছেড়েও শান্তিতে থেকো। “বাংলা রিপোর্টার্স গিল্ড ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তোমার পরিবারকে সমবেদনা জানাবার ভাষা নেই। খুব শান্তিতে থেকো। তোমার আত্মার শান্তি কামনা করছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.