ওয়েবডেস্ক: রাহুল গান্ধীর ভবিষ্যৎ সুপ্রিমকোর্টের হাতে৷ আরও স্পষ্ট করে বলেল ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর হাতে৷ যা পরিস্থিতি তাতে সাংসদ পদ হারাতে পারেন রাজীব পুত্র৷ এই বছর লোকসভা ভোটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে বহু সভায় প্রকাশ্যে বলেছিলেন ‘চৌকিদার চোর হ্যায়৷’ রাফাল দুর্নীতি নিয়েই তিনি এমন কথা বলেছিলেন৷ তাঁর এই জনপ্রিয় স্লোগান এবার বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে৷ যা তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে শেষ করে দিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷
অযোধ্যা মামলার রায়ের পরে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এর হাতে আরও পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা আছে৷ এর মধ্যে রাহুলের মামলা অন্যতম৷ ১৭ নভেম্বর অবসর নেওয়ার আগে এই মামলার ফয়সালা করবেন তিনি৷ সুপ্রিম কোর্ট এ’সপ্তাহের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ যে মামলার রায় দেবে৷ সেটি হল রাহুল গান্ধীর অবমাননার মামলা। রাহুল গান্ধী যে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন তা গ্রহণ করা বা না করার ক্ষমতা রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বাধী বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবে৷ এই মামলায় রাহুল দোষী সাব্যস্ত হলে কার্যত তাঁর রাজনৈতিক জীবন শেষ হয়ে যাবে৷ কাজেই গুরুত্বের বিচারে রাহুল মামলা অযোধ্যা রায়ের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়৷
বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষী লেখি রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে চৌকিদার চোর হ্যায় নিয়ে ফৌজদারি অবমাননার মামলা দায়ের করেছিলেন। আইন বলছে, দোষী সাব্যস্ত হলে, সেই ব্যক্তি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। অথবা যদি তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি হল তাহলে তার নির্বাচনই বাতিল হয়ে যায়। যদি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে ওয়ানাড থেকে রাহুল গান্ধীর নির্বাচনই বাতিল হয়ে যাবে। কখন প্রার্থীকে বাধা দেওয়া যায় ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারায় যদি কোনও ব্যক্তি কোনও অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হন এবং তাঁকে ২ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে তাঁকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হয়। যদি কোনও ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, আর তিনি যদি জামিন কিংবা প্যারোলে থাকেন, তাহলেও তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না। অবমাননা আইন আদালত অবমাননার সেকশন ১২তে অভিযুক্তের শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তাতে রয়েছে, ৬ মাসের হাজতবাস কিংবা ছয় মাসের হাজতবার এবং ২০০০ টাকার জরিমানা, দুই-ই।
এদিক থেকে দেখতে গেলে রাহুল গান্ধীকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে আলাদা করা যাবে না। আইনে বলা হয়েছে, ছয়মাস কিংবা ১৮০ দিনের হাজতবাস এবং নির্বাচন কমিশনের আইনে বলা হয়েছে, ২ বছর কিংবা তার বেশি সময়ের হাজতবাস হলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া যাবে। রাহুল গান্ধীর মামলা নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে চৌকিদার চোর হ্যায় মন্তব্যের জেরে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে অবমাননার মামলা দায়ের করেছিলেন বিজেপি নেত্রী মীনাক্ষী লেখি। রাহুল মন্তব্য করেছিলেন ১০ এপ্রিল। রাফালে নিয়ে ১৪ ডিসেম্বরের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতের রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। সেইদিন সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রের প্রাথমিক আপত্তি বাতিল করে দিয়েছিল। সব মিলিয়ে রাহুলের রাজনৈতিক জীবনে রাহুগ্রাস হতে চলেছে৷ এমনই আশঙ্কা করছে তাঁর দল কংগ্রেস৷ এক কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, বিরোধী বিশে৷ করে কংগ্রেসি নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷
সৌজন্য :- মহানগর