*লকডাউনের* *ফাঁদে* *চিকিৎসা* *পরিষেবা*, *চরম* *হয়রানির* *শিকার* *ঠাকুরপুকুরের* *রোগীর* *পরিবার*
পরিমল কর্মকার,অয়ন বাংলা,কলকাতা:- লকডাউনের ফাঁদে পড়ে চিকিৎসা পরিষেবা প্রায় শিকেয় উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও মানুষ যদি অসুস্থ হয়, তবে তাকে ডাক্তারখানায় কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কষ্টকর পর্যায়ে পৌঁছয়। এমন কি পৌঁছালেও “করোনার” জন্য সেখানে অন্য কোনও রোগের চিকিৎসা কার্যত: অসম্ভব বলে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনই এক তিক্ত অভিজ্ঞতা ও চরম হয়রানির শিকার ঠাকুরপুকুরের এক রোগীর পরিবার। গুরতর অসুস্থ অবস্থায় রোগিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাকে ভর্তি না রেখে অন্যত্র পাঠাবার ব্যাবস্থা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, ঠাকুরপুকুর পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা অনাদি ভৌমিক। বয়স প্রায় ষাঠের কোঠায়। পৈলানের একটি দর্জির দোকানের কর্মী তিনি। রবিবার রাত ৯ টা নাগাদ হটাৎই তার পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। তিনি তখন যন্ত্রনায় ছটফট করতে থাকেন। বাড়িতে লোক বলতে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে ও স্ত্রী। এলাকার সমস্ত ডাক্তারখানা বন্ধ থাকায়, তাকে তখন হাসপাতালে নেওয়ার উদ্যোগ নেন তার স্ত্রী ও মেয়ে। ঘণ্টাখানেক ধরে ওলা, উবের’এ ফোন করেও লকডাউনের জন্য কোনও গাড়ি পাওয়া যায়নি। শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশী এক ভ্যান চালক কাকুর সহযোগিতায় ভ্যানে করে রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ তাকে বেহালা বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
অনাদি বাবুর স্ত্রী রেবা ভৌমিকের অভিযোগ, হাসপাতালে তার স্বামীকে প্রায় ঘণ্টাখানেক চিকিৎসা ছাড়াই এমারজেন্সির বাইরে একটি টেবিলে ফেলে রাখা হয়। তারপর জানানো হয়, “চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।” কারন হিসেবে বলা হয়, “করোনা’র জন্য ডাক্তার কম আছে।”
তখন ওই সাইকেল ভ্যানে করেই তিনি তার অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে ক্যালকাটা হাসপাতালে যান। সেখানে তার এমারজেন্সিতে নামেমাত্র চিকিৎসা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। ভোর প্রায় ৫ টার সময় অসুস্থ রোগীকে নিয়ে বাড়ি ফিরে নাস্তানাবুদ অবস্থা তাদের। তারপর ২ দিন ওই রোগীকে নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে কাটিয়েছেন তারা। এখন তার অবস্থা স্থিতিশীল। কিছুটা ভাল আছেন তিনি।
রেবা ভৌমিক তার এই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে বলেন, কোনও শত্রুরও যেন এই লকডাউনের মধ্যে কোনও রোগ না হয়।