নিউজ ডেস্ক,অয়ন বাংলা :- মাদ্রাসা নিয়ে বিরুপ মন্তব্যের প্রতিবাদ করলেন জমিয়তে ওলাময়ে হিন্দ । জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী তৎপরতা নিয়ে যে বিবৃতি দিয়েছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুস সালাম এ সম্পর্কে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সংসদে মাদ্রাসা সম্পর্কে যে বিবৃতি দিয়েছেন, আমরা চরমভাবে ওই বিবৃতির বিরোধিতা করছি। আদৌ কোনও প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসের জন্য পরিচালিত হয় না, আমাদের কোনও মাদ্রাসার সঙ্গে এমন কোনও যোগসূত্র নেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যদি সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়ে থাকে সেটা ভারত সরকারের দায়িত্ব। সেজন্য ভারত সরকার দায়ী। তারজন্য কোনও প্রতিষ্ঠান বা ভারতের কোনও নাগরিক দায়ী নয়। ভারতকে সুরক্ষিত করার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারের। সীমান্ত অতিক্রম করে যদি কোনও সন্ত্রাসী এসে থাকে সেটা ভারত সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ।’
ক্ষমতাসীন বিজেপিকে টার্গেট করে মুফতি আব্দুস সালাম বলেন, ‘বিদ্বেষ ছড়ানোই একশ্রেণির উদ্দেশ্য। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এসব করা হচ্ছে। আদৌ ওদের কাছে সঠিক তথ্যভিত্তিক কোনও রিপোর্ট নেই। কেউ যদি একটা কাগজে লিখে বলে যে এটাই তথ্য, সেটা তো আর তথ্য হতে পারে না।’
তিনি বিজেপির উদ্দশ্যে বলেন, ‘চরিত্রহনন করাই ওদের উদ্দেশ্য। ওরা কোনোদিন এই ধরণের প্রতিষ্ঠানের চরিত্র কোনোদিন জানেইনি। কাছাকাছি এসে দেখার সৌভাগ্য ওদের হয়নি যে, এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ কী, এখানে কী পড়ানো হয়। শুধু বিভেদের রাজনীতি করে ক্ষমতা দখল করাই ওদের কাজ। দেশপ্রেম, দেশের উন্নয়ন ওরা বোঝেই না। দেশের সংজ্ঞাই ওদের কাছে নেই। একটা দেশ মানে একটা সম্প্রদায় নয়। সেখানে বহু সম্প্রদায়, বহু ভাষাভাষীর, বহু ধর্ম বিশ্বাসীর বাস। সেটাই একটা দেশ। একটা পরিবারের সন্তানদের নামে দেশ হয় না।’
জমিয়ত নেতা মুফতি আব্দুস সালাম বলেন, লালকৃষ্ণ আদবানি এদের পূর্বের পিতা তো বলে গেছেন যে, ভারতে কোনও মুসলিম সন্ত্রাসী নেই। সেকথা কী মনে নেই? ওরা তা ভুলে গেছেন? না, নব্য বিজেপি বলে সুর পাল্টে গেছে?’
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি পশ্চিমবঙ্গের দুই বিজেপি এমপি খগেন মুর্মু ও সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে গতকাল মঙ্গলবার সংসদে জানান, ‘গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী জেএমবি (নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠন) বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে নিজেদের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। মাদ্রাসাগুলোতে ছাত্র ভর্তি করে তাদের মগজধোলাই করে জিহাদের মন্ত্রে দীক্ষিত করার কাজ চলছে। গোয়েন্দা তথ্য রাজ্যকে জানানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘এটা বাংলায় অস্থিরতা তৈরির অভিসন্ধি। খাগড়াগড় কাণ্ডের পরে আমরা বলেছিলাম, কোনও একটা মাদ্রাসা থেকে সহিংসতা ছড়ানো হচ্ছে উদাহরণ দিন। আমরা নিজেরাই গিয়ে তালা দিয়ে আসব। কিন্তু জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ একটিও উদাহরণ দিতে পারেনি।’ এর আগেই এই বিষয়ে তদন্ত হয়েছিল কিন্তু প্রমান পাওয়া যায় নি।