মালয়েশিয়ায় চলছে ব্যাপক ধরপাকড় আতঙ্কে বাংলাদেশিরা
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক,অয়ন বাংলা:-
মালয়েশিয়ায় ইমিগ্ৰেশন এবং স্থানীয় পুলিশের দ্বিমুখী অভিযানের চাপে পালিয়ে জীবন কাটছে বাংলাদেশীদের। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসী বিরোধী ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চলছে প্রতিদিনই।কুয়ালালাম পুরের মাইডেন ,চৌকিট সহ বিভিন্ন একাকায় প্রতিদিনই গ্ৰেফতার হচ্ছে বাংলাদেশি সহ বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা।
অনেকেই বৈধ হওয়ার পরেও আইনের মারপ্যাঁচে গ্ৰেফতার করছে মালয়েশিয়া পুলিশ। বাংলাদেশ সরকার এবং মালয়েশিয়ায় অবস্থিত হাইকমিশনের অক্লান্ত পরিশ্রমের কারনে মালয়েশিয়া সরকার অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ দিলেও বৈধ না হয়ে অবৈধভাবে থেকে যায়। এরপর অবৈধ অভিবাসীদের দেশ ত্যাগের সুযোগ দিলেও সেই সুযোগটা কাজে না লাগিয়ে অবৈধভাবে রয়ে গেছে বহু বাংলাদেশি।
এছাড়াও টুরিস্টে আসা বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে না গিয়ে টুরিস্ট ভিসার অবৈধ ব্যবহার করে রয়ে গেছে মালয়েশিয়ায়। কথিতো বন্ধুবান্ধব এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে অনেকেই। অভিবাসন বিভাগের কঠোর নিয়মের কারণে অবৈধদের কাজে নেওয়া বন্ধ করছে মালয়েশিয়ার মালিকরা। আবার অনেককে কাজে নিলেও দীর্ঘদিন বেতন না দিয়ে দিব্যি কাজ করিয়ে নিচ্ছে।
শুধু খাওয়ার টাকা মাঝেমধ্যে দিলেও পুরো বেতনের টাকা দিচ্ছে না। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়া সরকার রি-হায়ারিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে এই অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ হওয়ার একটা সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু যে তিনটি ভেন্ডর কোম্পানিকে এর দায়িত্ব দেয়া হয়, তাদের নাম ভাঙিয়ে বেশকিছু নকল এজেন্ট বা দালাল বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।এরকম এক মানবাধিকার কর্মী বলেন, ‘”আমরা অনেক এমন ঘটনা পেয়েছি, যেখানে বাংলাদেশি শ্রমিকরা না বুঝে ওই ভুয়ো এজেন্টদের হাতে চার-পাঁচ হাজার রিঙ্গিত তুলে দিয়েছেন, তাদের আঙুলের ছাপও নেওয়া হয়েছে- কিন্তু এজেন্টরা ওই টাকা মেরে দেওয়ায় তাদের আর কখনওই বৈধ হয়ে ওঠা হয়নি।” এরকম একজন রহমত সেখ বললেন কপালের দুর্ভোগ তাই মালয়েশিয়া এসেছি।” আরো এরকম একজন হানিফ সেখ বললেন “এ মানবেতর জীবন কাটনো বড় কষ্টের।”
আরো বললেন যদি”
মালয়েশিয়া সরকারের দেওয়া সুযোগ কাজে লাগিয়ে যদি আজ দেশে চলে যেতাম তাহলে আজ কষ্টে দিনাতিপাত করতে হতোনা মালয়েশিয়ায়। হানিফ এই প্রতিবেদককে আরো জানায়, মা বারংবার ফোন করে খবর নেয়, আমি কেমন আছি। আমি শুধু বলি মা’ ভালো আছি। কি করে বলবো, আমি এখানে মানবতার জীবন যাপন করছি। না পারছি দেশে যেতে।
না পারছি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে। রাত হলেই চিন্তা হয় কি ধরা পড়ে জেলে যেতে হবে। ”
অভিবাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ২ হাজার ১০০টি অভিযানে আটক করা হয় ৩২ হাজার ৮৯৫ জনকে। আটকদের মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের ৮ হাজার ৫৫২ জন অবৈধ অভিবাসীকে। এ ছাড়া অবৈধ অভিবাসী রাখার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪৫ জন মালিককে।
আটকদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, নেপাল, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের নাগরিকরাও রয়েছেন।