মালদা মেডিক্যালে দালালদের খপ্পরে পড়ে এই রমজানে শেষ হয়ে গেল রমজান সেখ

Spread the love

অয়ন বাংলা, নিউজ ডেস্ক,মালদা : – মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দালালদের অত্যাচার ও টাকার দাবীতে এই রমজান মাসে শেষ হয়ে গেল রমজান সেখ। দালাল রাজ মালদা মেডিকেলে।সরকারি হাসপাতালে এমন ঘটনার সাক্ষী হল ইংরেজবাজার থানার যদুপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ইয়াজুল শেখ। এই চক্রের ফাঁদে পড়ে মৃত্যু হয়েছে তার ছেলের।

রোগীকে ক্যাথেটার লাগানোর চার্জ ২০০ টাকা৷ টাকা দিতে না পারলে ক্যাথেটার লাগানো হবে না, মিলবে না বেডও৷ কোনও প্রত্যন্ত গ্রামে নয়, দালালরাজের এই ছবি খোদ মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে৷

পেটের সমস্যা নিয়ে মালদা মেডিকেল কলেজে ভরতি হন রমজান শেখ (১৯)৷ বাড়ি ইংরেজবাজারের যদুপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলাবাড়ি গ্রামে৷ বাবা ইয়াজুল শেখ শ্রমিকের কাজ করেন৷ অভিযোগ, ভরতির পর বেড পর্যন্ত রোগীকে নিয়ে যাওয়া ও বেড জোগাড় করে দেওয়ার জন্য দালালরা ২০০ টাকা দাবি করে৷ কিন্তু ইয়াজুল সাহেব তা দিতে রাজি হননি৷ ভোর পাঁচটা নাগাদ রমজানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে ক্যাথেটার লাগানোর নির্দেশ দেন৷ সেই সময় মেডিসিন ২ ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্সদের একাংশ পরিবারের লোকেদের জানান, ওয়ার্ডবয়রা ক্যাথেটার লাগানোর কাজ করে৷ আবার শুরু হয়ে যায় দালালরাজ৷ চলতে থাকে দর কষাকষি৷ ক্যাথেটার লাগানোর জন্য ইয়াজুল সাহেবের কাছে ২০০ টাকা দাবি করে দালালরা৷ ইয়াজুল সাহেব জানিয়েদেন, তাঁর কাছে এই মুহূর্তে টাকা নেই৷ রমজানের শারীরিক কষ্ট দেখে পার্শ্ববর্তী বেডে থাকা রোগীর পরিবারের লোকজনও ওয়ার্ডবয়দের ক্যাথেটার লাগিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন৷ কিন্তু কার কথা কে শোনে! তাদের সাফ কথা, টাকা না পেলে ক্যাথেটার লাগানো হবে না৷ মৃত্যুর সঙ্গে দু’ঘণ্টা লড়াই করে সকাল সাতটা নাগাদ হার মানেন রমজান৷ইয়াজুল সাহেব জানান, “গতকাল রাত ১১টায় ছেলেকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করেছিলাম৷ ছেলের পেটের সমস্যা হয়েছিল৷ প্রস্রাব হচ্ছিল না বলে ছেলের পেটে ব্যথা করছিল৷ ভোর পাঁচটা নাগাদ ডাক্তারবাবুরা নার্সদের কাছে যেতে বলেন৷ রমজানকে ক্যাথেটার লাগিয়ে দিতে বলে। কর্তব্যরত এক নার্সের কাছে যেতে উচ্চস্বরে তিনি জানান, ক্যাথেটার আমি লাগাব না৷ ওয়ার্ডবয়ের কাছে যান৷ ওয়ার্ডবয়ের কাছে ক্যাথেটার লাগানোর অনুরোধ করতেই ২০০টাকা দাবি করে সে৷ আমি তাকে জানাই, এখন আমার কাছে টাকা নেই৷ সকালে বাড়ির লোকজন এলে টাকা দিয়ে দেব৷ কিন্তু সে রাজি হয়নি৷ অবশেষে ব্যথা সহ্য করতে না পেরে সকালে ছেলে মারা যায়৷ শুধুমাত্র ক্যাথেটার না লাগানোর জন্য আমার ছেলে মারা গেল৷

যদিও এই প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও পাওয়া যায়নি। তবে সরকারি হাসপাতালে টাকা ছাড়া কোনও কাজ হচ্ছে না তা আবারও বুঝিয়ে হাসপাতালের বাস্তব চিত্র। এই নিয়ে এলাকা বাসী বিক্ষুব্ধ এবং এর তদন্ত চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.