নিউজ ডেস্ক :- ভোটপ্রচারে কখনও মিরজাফর, কখনও গদ্দার বলে তিনি আক্রমণ করেছেন তৃণমূলত্যাগী নেতাদের। তবে শেষ পর্যায়ে এসে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সব দলত্যাগীর জন্য তাঁর আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ভোটে জিতে যেন মমতা দরাজদিল হলেন ওই ‘দলবদলু’ নেতাদের প্রতি। প্রশ্ন ছিল, দলত্যাগীরা তৃণমূলে ফিরতে চাইলে, তাঁর প্রতিক্রিয়া কী হবে? মমতা বললেন, ‘আসুক না। কে বারণ করেছে? এলে স্বাগত!’
মুখ্যমন্ত্রীর এই তিন বাক্য আলোড়ন তুলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। সব মহলেই প্রশ্ন, তা হলে কি ফের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা বাড়ছে ওই দলবদলু নেতাদের? প্রচারে যে যা বলেছিলেন, তা অতীত। ফল প্রকাশের পরে, প্রকাশ্যে মমতার প্রতি কটু মন্তব্য করেননি বিজয়ী-বিজিতদের কেউই। তবে তাঁদের কাছে তৃণমূলের তরফ থেকে কোনও প্রস্তাব গিয়েছে বলেও খবর নেই। আবার তাঁরাও তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, এমনও খবর নেই। তবে মমতার এই মন্তব্যের পরে তার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এক বিজেপি প্রার্থী যেমন ইতিমধ্যেই তৃণমূলে ফিরতে চেয়ে তদ্বির শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
ভোটের ফলে বিজেপির ধরাছোঁয়ার বাইরে তৃণমূল। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন যে হেভিওয়েট নেতারা, তাঁদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী, হিরণ চট্টোপাধ্যায় এবং নিশীথ প্রামাণিককে বাদ দিলে কেউই জয়ী হতে পারেননি। বিরাট ব্যবধানে হেরেছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, বৈশালী ডালমিয়ার, সুনীল সিং, শুভ্রাংশু রায়, শীলভদ্র দত্তেরা। ভোটে বিজেপি মুখ থুবড়ে পড়ার পরেই ওই নেতাদের কারও কারও তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। সোমবার কালীঘাটে যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মমতা, সেখানে ‘দলবদলু’দের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে মমতা তাঁদের স্বাগত জানান। তবে সেটা তাঁর কথার কথা, নাকি তেমন ঘটনা অচিরেই ঘটতে দেখা যাবে, তা নিয়েও জোর চর্চা শুরু হয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলের অন্দরে।