ডাঃ ইয়ার আলী , মেডিক্যাল অফিসার, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যবিভাগ—
বহু ডায়াবেটিস রোগীর একটা অনাড়ম্বর জিজ্ঞাসা এই মরসূমে
” ডাক্তারবাবু, আম খেতে পাব?”
তারই পরিপ্রেক্ষিতে মনে হল— আম নিয়ে একটা লিখনি দিব মিডিয়াতে যাতে যারাই পড়বেন , বুঝবেন তারা যেন আত্মবিশ্বাস,সঠিক জ্ঞান ও তথ্যের ভিত্তিতে ‘আম’কে আস্বাদন করত: উপকারটা লাভ করতে পারেন৷
আমাদের অনেকেরই এরকম ধারণা আছে যে, রাত্রে শয়নকালে এক গ্লাস ‘দুধ’ (ইষদুষ্ন) পাণ করলে ‘ঘুম’টা ভাল হয়৷ এটা অনেকটা প্লাসিবো এফেক্টের মত কাজ করে৷ কিন্তূ, প্রকৃতপক্ষে দুধের ফ্যাট ,সঙ্গে ল্যাকটোজ ( এ ফর্ম অব সুগার) প্যাঙক্রিয়াসকে অতিরিক্ত চাপে ফেলে দেয় বা স্ট্রেস করে; ইনসুলিন রেসিসট্যান্সি বৃদ্ধি করে৷ ফলে,এটাই ঘুম ঘুম ভাবের( স্লিপিনেস) ফল্স সেন্স তৈরী করে৷ এক্ষণে, প্রকৃত ঘুমের সহযোগী হল “আম” ( রিয়াল মিরাকল্ স্লিপিং এইড)৷
আপনি যখন বিছানায় শয়ণের আগে আম খাবেন তখন আমের ফাইটোকেমিক্যালস এবং এমাইনো এসিড যেমন- গ্লাইসিন(Glycine),গ্লুটামিন(glutamine),সিস্টিন(cystine) যেগুলো ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজের সঙ্গে সংযুক্ত ( bonded)থাকে—সেগুলি মস্তিষ্কে চলে যায়৷ সেখানে এগুলো পরিবাহিত হয়ে গেলে, দ্রুত নিঃশেষ হওয়া (depleted) নিউরোট্রান্সমিটারগুলি রেস্টোর বা পুণঃউজ্জিবীত হয়৷ ফলে, মস্তিষ্কের নার্ভগুলির প্রাকৃতিক ঘুম সৃষ্টিকারী কেমিক্যাল বা নিউরোট্রান্সমিটার পরিমিত ও গুণ সম্পন্ন হয়ে যায়৷ অতঃপর , প্রকৃত ঘুমের আস্বাদন পাওয়া যায় যদি শয়ণের আগে আম খাওয়া যায়৷ এইজন্য, ঘুমজনিত যাবতীয় সমস্যা বা ব্রেন রিলেটেড প্রত্যেক সমস্যার জন্য আম অত্যান্ত উপকারী খাদ্য বা ফল৷
এছাড়াও,অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাতেও উপকারী৷ ‘আম’ এ প্রচুর বিটা ক্যারোটিন থাকে, ত্বককে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে৷ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা এমনকি স্কিন ক্যান্সারের নিরাময়েও সহায়তা করে৷
হাইপোগ্লাইসেমিয়া, প্রি ডায়াবেটিস, ডায়াবেটিস-২ অসুখগুলিতে যেহেতু লিভারে গ্লাইকোজেন স্টোর বা গ্লুকোজ স্টোর নষ্ট হয়ে যায় বা কমে যায় , সেহেতু গ্লাইকোজেন স্টোরকে রিভার্স বা পুণঃউদ্ধার করতে ‘আম’ প্রচন্ডভাবে সাহায্য করে৷ ফলে, ডায়াবেটিসে “আম” আপনাকে খেতেই হবে যদি সুস্থতা চান৷ অনেকেই বলেন, আম খেলে সুগার বেড়ে যায়৷ কথাটা আংশিক সত্য হলেও প্রকৃত ঘটনা হল— যেহেতু লিভারের গ্লুকোজ স্টোরিং ক্যাপাসিটি দূর্বল এবং ইনসুলিন রেসিসট্যান্সি বেশী , সেহেতু আমের রেডিলি এভাইলেবল সুগার ব্লাডেই অনেকক্ষণ ধরে থাকে৷ কিন্তূ, কিছুসময় অতিক্রান্ত হলেই লিভার প্যাংক্রিয়াস এড্রিনালিন এর সমন্বায়িক কার্যকলাপে সমতা চলে আসে৷ তখন লিভার এ গ্লাইকোজেন স্টোর পর্যাপ্ত হয়, ব্লাডে গ্লুকোজ লেবেলে সমতা আসে৷ সেইজন্য, ভীতির কোন কারণ নাই৷ অবশ্যই আম খাবেন৷ তবে অল্প অল্প শুরু করে ধীরে ধীরে বাড়াবেন৷ এমনকি দিনে ২-৩ টা আমও খেতে পারবেন৷ সঙ্গে ডায়াবেটিসের প্রোপার ডায়েট প্রোটোকল( কুয়ান্টিটি নয়, কোয়ালিটি গত) , ট্রিটমেন্ট চালু রাখবেন৷
আমে প্রচুর বায়োএভাইলেবল ম্যাগনেশিয়াম থাকে যেটা ফাইটোকেমিক্যাল ফেনোলিক এসিডের সঙ্গে বন্ড থাকে৷ এটা সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম বা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে ঠান্ডা রাখে৷ ফলে—স্ট্রোক,কনভালসন,হার্ট এটাকের রিস্ক কমিয়ে আনে৷
ফলের শাঁস স্টোমাক ও অন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে৷ কষ্ঠ্যোকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে৷
অবশেষে, আম হল— অকল্পনীয় এক্সারসাইজ ফুড৷ কারণ, এটা মাংসপেশীতে সোডিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ও গ্লুকোজ প্রদান করে ৷ফলে, হার্ড ওয়ার্কের জন্য ক্লান্তিভাবটা সহজে আসেনা৷ তাই, যেকোন হার্ড ফিজিক্যাল বা মেন্টাল ওয়ার্কের জন্য — আমের জুড়ি নাই৷
নিম্নোক্ত অসুখগুলিতে “আম” উপকারী ও রোগ সারাতেও সাহায্য করে—
GERD,ADHD,Alzheimer’s disease, dementia,ulcers,skin cancer,insomnia,stomach cancer,renal failure,peptic ulcer,diabetes,Parkinson’s ds, kidney stone, epilepsy, Graves’ ds, Hashimoto’s thyroiditis,Glaucoma,macular degeneration,hypoglycemia,Crohn’s ds, PTSD, UTI, depression,personality disorder, eating disorders,anxiety,SAD,adrenal fatigue,CFS,Cognitive issues,colitis, cushing’s syndrome , fibroids, fatty liver, sun burn, mystery infertility .
উপরিউক্ত প্রত্যেকটি কাজের প্রভাব ভাল রকম পেতে ২ টি আম খান / ডে ৷