আমফান পরবর্তী দুর্ভোগের জন্য মন্ত্রী সাধন পান্ডে দায়ী করলেন ফিরহাদ হাকিমকে, প্রকাশ্য বাদানুবাদে অস্বস্তিতে তৃণমূল
পরিমল কর্মকার (কলকাতা) : আমফান পরবর্তী কলকাতার মানুষের দুর্ভোগের জন্য কলকাতা পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমকে দায়ী করলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পান্ডে। সাধন পান্ডের অভিযোগ, ঝড় ঝঞ্ঝার পর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিধায়কদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই করেননি পুর প্রশাসক। যারফলে কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জল নেই, বিদ্যুৎ নেই। এর প্রত্যুত্তরে পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম এক হাত নিয়েছেন ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীকে। বলেছেন, উনি নিজেই বা কেন আসেননি আলোচনা করতে ? তৃণমূলের দুই নেতার বাদানুবাদ মঙ্গলবার (২৬ মে) সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে প্রকাশ্যে আসতেই দলীয় অন্দরে তৃনমূলের অস্বস্তি বাড়ছে।
ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রীর অভিযোগ, আমফান ঝড়ের তাণ্ডবের পরে বিধস্ত কলকাতার স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরানোর জন্য কোনও কাজই করেনি কলকাতা পুরসভা। অনেক আগে থেকেই সাংঘাতিক ঘূর্ণি ঝড়ের পূর্বাভাস থাকা সত্বেও পুরসভা কোনও প্রস্তুতিই নেয়নি। এরপর, ঝড়ের পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলা কিভাবে করা হবে, তারও কোনও পরিকল্পনা গ্রহন করেননি পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। এমনকি কোনও বিধায়কের সঙ্গে আলোচনাও করেননি তিনি।
কলকাতা পুরসভার কমিশনারের পদ থেকে খলিল আহমেদকে সরিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধেও মুখ খোলেন সাধন পান্ডে। তিনি বলেন, খলিল আহমেদ অত্যন্ত দক্ষ প্রশাসক ছিলেন। তাকে সরিয়ে দেওয়া উচিৎ হয়নি। এই সঙ্গেই প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শোভনও এই বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ। এখন তিনি যে দলই করুন না কেন, একজন বিধায়ক তো বটেই। এব্যাপারে তার সঙ্গেও তো কথা বলা যেত। আসলে ফিরহাদ হাকিম কারোর সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেন না। যারফলে ঝড় পরবর্তী পর্বে ভাঙ্গা গাছ সরানো থেকে শুরু করে, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে কলকাতাবাসীকে।
অন্যদিকে, কলকাতার পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম সাধন পান্ডের নামোল্লেখ না করে তার দিকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। বলেছেন, “আমি তো রাস্তায় নেমে কাজ করছি। আর যারা সমালোচনা করছেন তারা তো করোনা’র ভয়ে বাড়িতে বসে রয়েছেন।” তৃনমূলের হেভিওয়েট এই দুই নেতার পরস্পর বিরোধী বাগবিতন্ডা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসতেই অস্বস্তি বাড়ছে দলীয় অন্দরে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও ফিরহাদ হাকিমের তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন, ঝড়, ঝঞ্ঝা ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন পুর প্রশাসক।