ফের সাধু হত্যা মহারাষ্ট্রের পালঘরের পর এবার উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে

Spread the love

নিউজ ডেস্ক:- ফের সাধু হত্যা! এবং এবার স্বয়ং যোগীর রাজ্যেই!
মহারাষ্ট্রের পালঘরের পর এবার নারকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর। শিব মন্দিরে ঘুমিয়ে থাকা দুই সাধুকে খুন করল এক দুষ্কৃতী। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর।
সোমবার রাতে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের একটি মন্দিরে দু’জন সাধুকে খুন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এই দুই সাধুই সম্প্রতি চুরির অভিযোগ আনেন এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ৫৫ এবং ৩৫ বছরের দুই সাধু একটি ছোট মন্দিরে অস্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করেছিলেন। সেখানেই গতকাল সন্ধ্যায় তরোয়াল দিয়ে হত্যা করা হয় তাদের। এই ঘটনায় রাজু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ হত্যাকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি দু’জন পুরোহিতকে হত্যা করার সময় “প্রচণ্ড নেশার ঘোরে” ছিল এবং এখনও মাদকাসক্ত অবস্থাতেই রয়েছে। মাদকের প্রভাব কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই অপরাধের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক কোনও যোগ নেই বলেই মনে করা হচ্ছে।

এক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার সিং সংবাদমাধ্যম এএনআইকে বলেন, “দুই সাধুবাবা এখানে মন্দিরেই থাকতেন। মুরাই ওরফে রাজু নামে এক ব্যক্তি, তফসিলি উপজাতি ভুক্ত। তিনি একটি ‘চিমটা’ উঠিয়ে নিয়ে যান। যে কারণে পুরোহিতরা তাকে ধমক দেন এবং নির্যাতনও করেন। হত্যাকাণ্ডের পরে যখন গ্রামবাসীরা তাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে তখন দেখা যায় গাঁজা-ভাঙ খেয়ে সম্পূর্ণ নেশাগ্রস্ত মুরাই, তার দেহেও সামান্য পোশাক অবশিষ্ট।

অনুমান, পুরোহিতরা এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনায় রেগেছিলেন মুরাই। সন্তোষ সিং জানান, স্বাভাবিকভাবেই মনে হচ্ছে গাঁজা খেয়ে নেশা করে তিনি মন্দিরে গিয়ে তরোয়াল দিয়ে দু’জনকে হত্যা করেন।

কিছু দিন আগেই মহারাষ্ট্রের পালঘরে উন্মত্ত জনতা দুজন সাধু ও তাদের গাড়ি চালককে গণপিটুনিতে মেরে ফেলে। এমন গুজবও ছড়ায় যে ওই সাধুরা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রির জন্য শিশুদের অপহরণ করে নিয়ে যায়।

বিজেপির একাধিক নেতা এবং দলের আদর্শিক পরামর্শদাতা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) অভিযোগ করেছে যে সাধুদের পরিকল্পনা করেই হত্যা করা হয়েছিল, তবে মহারাষ্ট্র সরকার এর কোনও সাম্প্রদায়িক দিক অস্বীকার করেছে।

মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন শিবসেনার নেতা প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী টুইট করে বলেছেন: “ভয়াবহ সংবাদ!! উত্তরপ্রদেশ সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে আশা করছি। আশা করি টেলিভিশন মিডিয়া এবং সংবাদপত্র সংস্থার কিছু অংশ এই বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক করার চেষ্টা করবেন না এবং মুখ্যমন্ত্রীকে দোষ দেবেন না, তাও এমন একটা সময়ে যখন রাজ্য ও দেশ কোভিডের সঙ্গে লড়াই করছে।”

পুলিশ সূত্রে খবর, বুলন্দশহর জেলার অনুপশহর থানা এলাকার পাগোনা গ্রামে এই হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়েছে। সোমবার রাতে গ্রামের একটি শিব মন্দিরে ঘুমাচ্ছিলেন জগন দাস (৫৫) ও সেবাদাস (৩৫)। তখনই হানা দেয় আততায়ী। মঙ্গলবার সকালে মন্দির চত্বরে দুই সাধুর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পেয়ে এলাকায় প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারপরও হত্যায় জড়িত থাকার সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করে পুলিশের হতে তুলে দেয় গ্রামবাসীরা।


বুলন্দশহরের পুলিশ প্রধান সন্তোষ কুমার সিং জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে নিহত সাধুদের একটি চিমটা চুরি করে অভিযুক্ত। বিষয়টি জানতে পেরে অভিযুক্তকে বেশ দু’কথা শুনিয়ে দেন সাধুরা। তারপর বদলা নিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় ধৃত ব্যক্তি। তবে গোটা বিষয়টি আরও ভালভাবে খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি

সৌজন্য:- এন ডি টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.